বাচ্চা কবুতর বেড়ে ওঠার সাথে সাথে শরীরের চাহিদার তুলনায় খাবার কম খাওয়া।এবং শুকিয়ে বুকের হাড় বেরিয়ে যাওয়া। পানি পানি নরম ড্রপিং করা, ড্রপিং এর কালার একেক সময় একেক রকমের দেখা যায় । ঠান্ডা সর্দি কাশি শ্বাসকষ্ট। এগুলো সবই ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। এগুলো ব্যাকটেরিয়াল রোগ হলেও ছোঁয়াচে রোগ নয়। অর্থাৎ খামারের অন্য কবুতর আক্রান্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে এই রোগটি সঠিক সময় প্রতিরোধ ও প্রতিকার না করা হলে। এবং খামারে অন্য রোগের আক্রমন দেখা দিলে । কবুতর বিকলাঙ্গ, চর্মরোগ, প্যারালাইজড, সামান্য অসুস্থতা তে ঘাড় বাঁকা বা টাল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি এমন কি মারা যাবার সম্ভাবনা ও বেশি থাকে। এই ব্যাকটেরিয়ার নাম ইকলাই
ইকলাই এক ধরনের পরজীবী ব্যাকটেরিয়া।
যা দুই ভাগে বিভক্ত , একটি গ্রাম নেগেটিভ ক্ষতিকারক, অপরটি গ্রাম পজিটিভ উপকারী।
খতি কারক কিছু ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতি রোগজনক এবং সংক্রামক ব্যাধির কারণ। যেমন, সালমোনেলা প্লেগ, টাইফয়েড, কলেরা, ডিপথেরিয়া, আমাশা, হুপিং কাশি, চর্মরোগ ইত্যাদি ই কলাই ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ।
ক্ষতিকর নয় এরূপ ই. কোলাই স্ট্রেইন শরীরে বাস করে। এরা ভিটামিন কে২ তৈরি করায় অবদান রাখে , এবং শরীরে ক্ষতিকর রোগ সৃষ্টিকারী অনুজীবের দল গঠনে বাধা প্রদান করে। ব্যাকটেরিয়ার বর্ণিত প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ১৫,০০০। এরা সবাই রোগজীবাণু এবং সবসময়ই ক্ষতিকর এ ধারনা ঠিক নয়। ব্যাকটেরিয়ার নানাবিধ উপকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষায় ব্যাকটেরিয়ার গুরুত্ব অনেক,
জীব যন্ত্র ও পাখির শরীরে বসবাসকারী দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়াগোষ্ঠী উপস্থিতি থাকে।
খাদ্য থেকেও গ্রাম নেগেটিভ ও গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হতে পাড়ে।
শর্করা ও প্রবায়োটিকস জাতীয় খাবার থেকে যে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয় সেটি উপকারী ব্যাকটেরিয়া। যা
পরিপাকে সাহায্য করে।
![]() |
এছাড়া অনেকগুলি খতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টির উৎস , অতিরিক্ত ঔষধ সেবন অ্যান্টিবায়োটিক এবং রাসায়নিক উপকরণের ব্যবহারে। মারাত্মক খতিকারক কিছু ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ সৃষ্টি হয়। যেমন হরমোন ঘাটতির জন্য প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়। কলেরা, আমাশা টাইফয়েড, শ্বাসতন্ত্রের রোগ নিউমোনিয়া, সালমোনেলা, চর্মরোগ ইত্যাদি। এছাড়াও
ই কলাই রোগের জীবাণু বহন করা কবুতর ঠান্ডা জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার সাথে যদি খামারে অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাব বেশী থাকে, সেক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। রোগে আক্রান্ত কবুতর দ্রুত সেকেন্ডারি ইনফ্লেকশনাল টনিক পর্যায়ে চলে যায় বিশেষকরে শ্বাসতন্ত্রের রোগ শ্বাসকষ্ট। যার জন্য কবুতর পালকরা এজিথ্রোমাইসিন ব্যবহার করেও রেজাল্ট পায়না।
এর কারন শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে তখন রোগ দ্রুত সেকেন্ডারি টনিক পর্যায় চলে যায়,। তখন মেডিসিন ও কার্যকারী হয়।
ইকলাই রোগের লক্ষণ
শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। আক্রান্ত পাখিগুলো হাঁটাচলা করতে চায়না , চাহিদার তুলনায় খাবার কম খায়, এভাবেই ক্রমান্বয়ে স্বাস্থ্যহানি ঘটে। পরবর্তীকালে আস্তে আস্তে মারা যেতে থাকে। ই কলাই জীবাণু বহন করা কবুতর থেকে যে বাচ্চা আসে সেই বাচ্চার মধ্যেও ই কলাই জীবাণু বহন করে। যার কারনে বাচ্চা বড় হওয়ার পরেও স্বাস্থ্যহানি ঘটিত সমস্যা দেখা দিয়ে মারা যেতে পারে। পেটে পানি জমে থাকে। মলদ্বারে সাদা সাদা আঠালো পদার্থ দেখতে পাওয়া যায়। পায়খানার পথে প্রজনন তন্ত্রের কোন অংশ বের হয়ে আসতে পারে।
প্রতিরোধ:
প্রথমত রোগপ্রতিরোধ খমতা বৃদ্ধি রাখায় গুরুত্ব দেয়া।শরীরে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বিনষ্ট হয়, উপকারী ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হয়। এ ধরনের প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিকস যুক্ত খাবার বাছাই করে খাওয়ানো জরুরী। এক্ষেত্রে মেডিসিন এর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া নিষ্ক্রিয়করণ, টক্সস্লিন প্লাস, নিউট্রিলাক, রেনেটার পোল্ট্রি স্টার সল্ট, ও ACME প্রোজাইম ভেট কার্যকরী ভুমিকা রাখতে পারে।
এধরনের সমস্যার সমাধানে অন্তত দুই মাসের জন্য ও-ই কবুতর গুলো বাছাইকরে আলাদা করা উচিৎ ।
যে কবুতর গুলোর বাচ্চা বড় হওয়ার পরে শরীরের চাহিদার তুলনায় খাবার কম খায়, এবং ধিরে ধিরে শুকিয়ে যায়। ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকারী।
যেমন ভিনেগার, মধু, ফ্যাটজাতীয় প্রবায়টিক টক দধির পানি। রসুনের পানি, জিংক, ভিটামিন সি ও রক্তবর্ধক আয়রন। আলাদা আলাদা সময় খাওয়ানো হলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
প্রতিকার।
ই কলাই সংক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে প্রতিকারে। অ্যান্টিবায়োটিক ও টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের মেডিসিন এর সমন্বয় চিকিৎসায় ভালো রেজাল্ট পাওয়া যেতে পারে।
প্রতিকার, এন্টিবায়োটিক সিপ্রোসিন ভেট, টেট্রাসাইক্লিন কট্রাভেট। টক্সস্লিন প্লাস। লাইসোভিট, ওরিগো প্লাস, রেনা পি এস। উল্লেখ্য বিষয় এখানে যে পাঁচটি মেডিসিনের নাম দেয়া হয়েছে।
তারমধ্যে একটিমাত্র মেডিসিন এন্টিবায়োটিক। বাকি মেডিসিন গুলো কবুতরের শারীরিক খতি না হয়, অর্থাৎ টাল বা ঘাড় বাঁকা, কিংবা সুস্থ স্বাভাবিক হওয়ার পরবর্তীতে প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট না হয় তার জন্য সহায়ক।
পোস্টে কোন মেডিসিনের নিয়ম লিখতে পারলাম না বলে দুঃখিত।
তবে এই বিষয় মেডিসিন ব্যাবহারের নিয়ম সহ একটি আর্টিকেল পরবর্তীতে লিখে রাখবো। যা শুধু জরুরী কারো প্রয়োজনে ইনবক্সে সেন্ট করবো। মানুষ বুঝে।
ধন্যবাদ।
0 মন্তব্যসমূহ
Thanks for Commenting! please follow our blog and see update continue