শীত আসন্ন, আমরা যারা কবুতর পালন করি এদের মধ্যে কিছু পালকের জন্য সেটি ভালো হলেউ বেশিরভাগ খামারিদের ঘুম হারাম হতে চলেছে। প্রকৃতপক্ষে শীত কবুতরের উত্তম ব্রিডিং এর জন্য একটি উপযুক্ত সময় হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।অথচ এই সময়ে বাংলাদেশের বেশিরভাগ খামারি আতংকের মধ্যে সময় অতিবাহিত করেন। বাইরের দেশগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় শীতের সময়ে তাদের লফ্টের ব্রিডিং ক্ষমতা উন্নতকরণ সহ জাত উন্নয়নের উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু কেন?
প্রকৃতপক্ষে কবুতরের ইমিউনিটি ক্ষমা ঠিক থাকলে এই শীতই হতে পারে আপনার জন্য আশীর্বাদ সরুপ।যেমনটি বাইরের দেশগুলোর বড় বড় খামারে দেখাযায়। অনেকই আমাকে বলেন ভাই শীত আসন্ন কিভাবে কি করলে কবুতর গুলোকে এই শীতে কবুতর গুলোকে রক্ষা করবো।
আচ্ছা আপনি মনে করুন শীত প্রধান দেশগুলোর কথা যে দেশগুলোতে বছরের বেশিরভাগ সময় শীত থাকে। আবার এই এই শীতপ্রধান দেশগুলোর মধ্যে অ্যান্টার্টিকা, আইসল্যান্ড,আমেরিকা, আলাস্কা, এস্টনিয়া, কাজাখস্তান, কানাডা, গ্রিনল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, মঙ্গোলি,এসব দেশ গুলোতে শীত মৌসুমে -১০°© থেকে শুরু করে কোন কোন দেশে তো -৪০°© তাপমাত্রা দেখাযায় অথচ আামদের দেশের সর্বনিন্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৫°© এর কাছাকাছি। এসব অনেক দেশেই রয়েছে বিশ্বের বড় বড় রেসিং কবুতরের খামার, ফেন্সি কবুতরের খামার। তাহলে এরা কি ভাবে কবুতর গুলোকে মেইনটেইন করে। বিষয়টি হয়ত আমাদের কাছে ভাবনার কিন্তু আপনি যদি আপনার কবুতর গুলোকে সঠিক খামার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে লালন-পালন করতে পারেন তবে শীত আপনার জন্য হতে পারে আশীর্বাদ।
আমাদের দেশের কবুতর খামারিদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঔষুধ নির্ভর খামার গড়ে তোলা ফলে দেখা যায় কবুতর শারীরিক ভাবে ফিটনেস ঠিক আছে মনে হলেউ প্রকৃতপক্ষে কবুতরের ইমিউনিটি ক্ষমতা ভেতর থেকে শেষ হয়ে গিয়েছে ফলাফল হিসেবে দেখা যায় খামারে কোন রোগ প্রবেশ করলে কবুতরগুলো সহজেই আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। কবুতরের শরীরের ইমিউনিটি ক্ষমতা ঠিক রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সুষম খাবারের পাশাপাশি যেটা প্রয়োজন সেটি হলো অযাচিতভাবে ঔষুধ প্রয়োগ বন্ধ করা,কৃত্রিম উপাদানের প্রয়োগ বন্ধ করা । এবং প্রাকৃতিক খাবারের বা উপাদানের প্রতি মনোযোগ দেয়া। আমরা এই বিষয়ে পূর্বে আমাদের "প্রাকৃতিক উপায়ে পরিচর্যা" অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি প্রয়োজনে দেখে নিতে পারেন।
আজ আমাদের আলোচনার সাথে খন্দকার আসাদুজ্জামান কাজল ভাইয়ের একটি সাপ্তাহিক প্রাকৃতিক কোর্স শেয়ার করবো।
কবুতরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ করে শীত মৌসুমে এবং কবুতরের শরীরের ইমিউনিটি ক্ষমতা বাড়াতে পরামর্শটি অধিক কার্যকরী ভুমিকা রাখবে।
মূল আলোচনাঃ- যাদের জায়গায় সল্পতার কারনে ফ্লাইং জোন নেই ফলে বাধ্য হয়েই মেডিসিন নির্ভর কবুতর লালন-পালন করতে হয়। এবং কবুতরের রোগব্যাধি ঠেকাতে বিভিন্নরকম ঔষধ দিয়ে মাসিক কোর্সের উপরে নির্ভরশীল। তাদের জন্য আমি সাপ্তাহিক কোর্সের পরামর্শ দিলাম বিশেষকরে শীতকালীন সময়ের জন্য।
প্রথম সপ্তাহঃ
প্রথম দিনঃ- মধু ৫ লিটার কুসুম গরম পানির সাথে ১ কাপ,এক বেলা।
দ্বিতীয় দিনঃ- ভিটামিন সি লেবুর রস ১ লিটার পানিতে ১ মিলি,এক বেলা।
তৃতীয় দিনঃ- জিংক- জিজভেট ১ লিটার পানিতে ৩ মিলি,এক বেলা।
চতুর্থ দিনঃ- টক দধির পানি, ৫ লিটার কুসুম গরম পানির সাথে ১ গ্লাস,এক বেলা।
পঞ্চম দিনঃ- তুলসীপাতার রস ৫ লিটার পানিতে ১ গ্লাস,এক বেলা।
ষষ্ঠ দিনঃ- ভিনেগার ৫ লিটারে ২৫ মিলি, এক বেলা।
সপ্তম দিনঃ- প্রজাইম ভেট ৫ লিটারে ১০ গ্রাম,এক বেলা।
বিঃদ্রঃ সকাল অথবা বিকাল বেলার মধ্যে একবেলা অবশ্যই নরমাল পানি পরিবেশন করবেন।
দ্বিতীয় সপ্তাহঃ
প্রথম দিনঃ- টক দধির পরিবর্তে রেনা পি এস ১ লিটার পানিতে ১ মিলি, এক বেলা।
দ্বিতীয় দিনঃ- টক্সস্লিন ১ লিটার পানিতে ২ মিলি, এক বেলা।
তৃতীয় দিনঃ- নিউট্রিলাক ২ লিটার পানিতে ১ মিলি, এক বেলা।
চতুর্থ দিনঃ- ভিটামিন ডি ১ লিটার পানিতে ৩ মিলি,এক বেলা।
পঞ্চম দিনঃ- লেবুর রস ১ লিটার পানিতে ১ মিলি, এক বেলা।
ষষ্ঠ দিনঃ- জিংক ১ লিটার পানিতে ৩ মিলি এক বেলা।
সপ্তম দিনঃ- ভিনেগার ১ লিটারে ৫ মিলি, এক বেলা।
আসলে কবুতরের জন্য মাসিক কোর্স, কিংবা সাপ্তাহিক কোর্স কোনটাই প্রযোজ্য নয়।
তবুও যাদের যায়গায় সল্পতা, চাকরি কিংবা অন্য কোন পেশায় কর্মরত থাকায়। কবুতরের পেছনে যথেষ্ট সময় দেয়ার সুযোগ নাই। পরামর্শটা মূলত তাদের জন্য।
কবুতরকে সুস্থ রাখতে প্রাকৃতিক উপাদানের ভুমিকা অনেক,এতে করে কবুতরের শরীরে রোগপ্রতিরোধব্যবস্থা প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি হয়। ফলে যে কোন আবহাওয়া বা পরিবর্তনে কবুতর থাকে সুস্থ এবং স্বাভাবিক।
"আসুন অযাচিত ভাবে কৃত্রিম ঔষুধ প্রয়োগ বন্ধ করি এবং প্রাকৃতিক উপাদান নির্ভর খামার গড়ে তুলি"
আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন।
2 মন্তব্যসমূহ
আমি একজন একদম নতুন কবুতর পালক,কবুতর পালছি মাত্র ২ মাস,এখন অস্থির অবস্থায় আছি,দিল্লিকা লাড্ডুর মত,আপনার পোস্ট ভালো লেগেছে,কিন্ত সাহায্য পাওয়ার রাস্তা কোথায়।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ আমাদের সাইটি ভিজিট করার জন্য। যে কোন সময় লাইভ সাপোর্ট পেতে আমাদের পেজে ম্যাসেজ করুন। https://www.facebook.com/pigeonhealthcarebd/
মুছুনThanks for Commenting! please follow our blog and see update continue