বর্ষাকাল প্রায় শেষের দিকে, শীতের আগমন ও অন্তত দুই আড়াই মাস বাকি।
মধ্যবর্তী সময় টা কবুতর পালকদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান সময়।কবুতরের শারীরিক ফিটনেস,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পরিপূর্ণ ভাবে তৈরি করার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং উপযুক্ত সময়। যে সকল কবুতর পালকদের মধ্যে শীত মৌসুমে সালমোনেলা,ঠান্ডা, সর্দি-কাশি সহ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াল রোগে আক্রান্ত হবার আতঙ্ক থাকে তাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।যদিও শীত মৌসুম কবুতর পালকদের জন্য মোটেও আতঙ্ক নয়। বরং শীত মৌসুম কবুতরের জন্য ভালো প্রজনন মৌসম।
আশাবাদী এবং যথাযথ ভাবে মেনে চলতে চেষ্টা করবেন। চলুন তাহলে করনীয় সম্পর্কে যেনে আসা যাক।
বর্ষাকালের শেষ, শীতের শুরু, মধ্যবর্তী সময়ে করনীয়ঃ-
১/ কবুতর গুলোকে ফ্লায়িং জনে ছেড়ে রেখে মিনিমাম দুই মাসের জন্য ফুল রেস্টে রেখে দিন । এতে কবুতর শারীরিক এক্সারসাইজ এর মাধ্যমে ৷ বিভিন্নরকম খাবার কৃত্তিম ভিটামিন ও মেডিসিন থেকে শরীরে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ফ্যাট সৃষ্টি হয় তার পরিপূর্ণ নিরসন হবে। শারীরিক ফিটনেস ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পরিবর্তিত আবহাওয়ায় এডজাস্ট হয় সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
২/ কৃমির কোর্স কমপ্লিট করান।কারন কবুতরের পেটে কৃমির উপস্থিতি না থাকলে, ছোটখাটো রোগের আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে ফলে এন্টি বডি তৈরী হতে সহায়তা করে।
৩/ PMV ভ্যাকসিন কমপ্লিট করান। কারন ভ্যাকসিন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শরীরে এন্টিবডি তৈরি করে।
৪/ ভবিষ্যতে রোগবালাই হবে না, এজন্য অ্যাডভান্স অপ্রয়োজনীয়' মেডিসিন দ্বারা মাসিক কোর্স বয়কট করুন । কারন এগুলো কবুতরকে রোগের আক্রমন থেকে রক্ষা করার জন্য মোটেও কার্যকরী নয়। বরং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করায় জন্য কার্যকারী ভূমিকা রাখে। বিশেষকরে যে মেডিসিন গুলি দিয়ে মাসিক কোর্স করানো হয়, সেই মেডিসিন গুলির কোম্পানির নির্দেশিকা ফলো করুন। প্রস্তুতকারী মেডিসিন কোম্পানি কোন কোন রোগের জন্য ও-ই মেডিসিন তৈরী করেছে, রোগের প্রতিকার এর জন্য, না প্রতিরোধের জন্য। কারন অনলাইনে যে মেডিসিন গুলি দিয়ে মাসিক কোর্স করানোর পরামর্শ দেয়া হয়। আমার জানামতে তার বেশীরভাগ মেডিসিনই প্রস্তুতকারী মেডিসিন কোম্পানির নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিকারের জন্য। প্রতিরোধের জন্য নয়।
৫/ রেস্টে থাকা কালীন সময়ে বাছাইকৃত পুষ্টিকর খাবার দিন। সাথে প্রোবায়োটিক জাতীয় খাবার ব্যবহার করুন।এক্ষেত্রে এসিআই কোম্পানির "প্রজাইম ভেট"। এটি জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরী দেশীয় ACI কোম্পানির মেডিসিন। যাতে প্রোবায়োটিক,প্রিবায়োটিকস,এনজাইম,ভিটামিন ও মিনারেল এর একটি সুষম সমন্বয় আছে ,এটি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া নিষ্ক্রিয় করে, উপকারী ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করে। এবং সালমোনেলা,ই-কলাই রোধে কার্যকরী ভুমিকা রাখে। অস্ত্রে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া কলোনাইজেশন ও বংশ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে।এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে। ফলে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ কমে যায়।
পাশাপাশি টক্সস্লিন প্লাস, নিউ্ট্রিলাক, জিংক, ভিটামিন সি, ভিনেগার,মাঝে মাঝে টক দধির পানি ব্যবহার করুন।
৬/ দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার শেষের দিকে, যদি মনে করেন কিছু ভিটামিন দেয়া উচিৎ, তাহলে ফ্লাইং জনে থাক অবস্থায়ই দেয়া ভালো। কারন খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন খাওয়া আর কৃত্রিম ভিটামিন কখনো এক নয়। কৃত্রিম ভিটামিন শরীরে এডজাস্ট হতে সময় নেয় এজন্য শারীরিক এক্সারসাইজ দরকার।
শীত মৌসুম কবুতর পালকদের জন্য মোটেও আতঙ্ক নয়। বরং শীত মৌসুম কবুতরের জন্য ভালো প্রজনন মৌসম। দুই মাস কষ্ট করেন কবুতরের শারীরিক ফিটনেস বৃদ্ধি পাবে, রোগপ্রতিরোধ খমতা বৃদ্ধি পাবে। রোগব্যাধিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমে যাবে। আক্রান্ত হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে। দুই মাসের ধৈর্য আর পরিশ্রমের ফল, পুরো শীত মৌসুমে অবশ্যই আপনি পেতে পারেন । সুস্থ স্বাভাবিক কবুতর থেকে, ভালো বাচ্চাকাচ্চা উৎপাদন এর মাধ্যমে।
আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।
আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।
Senior Pigeon Breeder and Admin(Only Fancy Pigeon Club in Bangladesh)
*******Thank You *******
আল্লাহ হাফেজ
0 মন্তব্যসমূহ
Thanks for Commenting! please follow our blog and see update continue