Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

নতুন কবুতর পালকেরা বৈষম্যের স্বীকার


নতুনেরা তাদের আচারিক ব্যবহার গুণেই প্রতারিত হচ্ছেন বেশি। এ ক্ষেত্রে, পুরাতনদের দায় থেকে নতুনদের দায়টাই অনেক ক্ষেত্রেই বেশি বলে আমার যা ধারণা।


নতুনেরা দেখছি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিক্রেতাকে তেমন একটা রেসপেক্ট করে না। নিজেরা খুব বেশি জানে, বুঝে এমন আচরণগুলি করে থাকে।


ধরা যাক, 

✅ ক্রেতাঃ  ম্যাসেঞ্জারে নক দিলেন, ভাইয়া ওমুক কবুতরের দাম কত? 

বিক্রেতাঃ ভাইয়া ৫০০০ টাকা বেবী পেয়ার?

ক্রেতাঃ রানিং কত? (হঠাৎ অতর্কিত প্রশ্ন )

এখানে ক্রেতার দরকার ছিল কি রানিং এর দাম জিজ্ঞাসা করা? এটা কিন্তু একধাপ এডভান্স বলা।

আবার ক্রেতা, পিক একটি সো করে বলবে, এটি কিনেছি ১৫০০ টাকায়। এই কবুতরের দাম এত নয়। আপনি কয় জোড়া নিবেন আমার থেকে? তবে যে এ কথাগুলি চরম ভাবে অতর্কিত বার্গেইন মূলক।

এখানে ক্রেতা যে পিক দেখালেন, বিক্রেতার কোয়ালিটির ধারে কাছেও না। অতএব সে কবুতরই চিনে না বুঝা যায়।

কিন্তু বিক্রেতাকে যে তিনি চ্যালেঞ্জ করলেন? আমি এখানে কি ভুল বললাম?

যদি ক্রেতা বলেন, ভাই আমিতো বিক্রির জন্য পোস্ট করেছি, ক্রয়ের জন্যতো নয়?

ক্রেতা বলবেন, আমি কি অনুচিত বললাম?


✅ ক্রেতাঃ ওমুক কবুরের বেবী পেয়ার কত?

বিক্রেতাঃ দাম ৫০০০ টাকা। 

ক্রেতাঃ এক দাম বলেন?

বিক্রেতাঃ ৪৫০০ এক দাম।

ক্রেতাঃ ১৫০০ দিব, পারলে নক দিয়েন।


এখানে নতুন ক্রেতার সামাজিকতা বোধটাই নাই বললে চলে। কারণ এক দাম বলার পরেতো আর দাম চলে না? হয় ক্রেতাকে জিনিস নিতে হবে ঐ দামে, নতুবা তাকে জিনিস নেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কিন্তু দ্বিতীয় দাম বলাটা কতটা যৌক্তিক?

যদি ক্রেতা বলেন, এক দাম বলার পর কি আর দ্বিতীয় দাম বলা উচিত?

তিনি বলবেন, আমি কি অনুচিত বললাম?


✅ ক্রেতাঃ হোয়াইট লক্ষা বেবীর দাম কত?

বিক্রেতাঃ আমেরিকান বেবী পেয়ার ৪৫০০ টাকা।

ক্রেতাঃ ম্যাসেঞ্জারে লিখলেন, ইন্ডিয়ান রানিং এর দামই ৪৫০০ টাকা নয়।


অতপর বিক্রেতার আইডির স্কিনসট ও ম্যাসেজিং এর স্কিনসট সংযোজন করে, ফেচবুকে পোস্ট করলেন।


পোস্ট অংশ, 

" অবস্থা বড় খারাপরে ভাই! এক জোড়া জিরো পরের সাদা লক্ষার বেবীও যখন ৪৫০০ টাকা!"


দেখুন, এখানে আমেরিকান লক্ষা কথাটি গোপন করে গেলেন। যাতে করে, বিক্রেতাকে ঘায়েল করতে সহজে কমেন্টকারীদের দৃষ্টি পক্ষে নেয়া যায়।


অতপর তিনি কজ দেখান, বিক্রেতাকে হেয় করার জন্য পোস্ট করেননি, নতুনদের বাজারটা বুঝানোর জন্য পোস্ট দিছেন।

বিক্রেতা আইডির স্কিনসট দিয়ে পোস্ট দিলেন, তবে কি তিনি বাজার বুঝার জন্য পোস্ট দিলেন, নাকি ক্রেতাকে প্রতারক হিসেবে তুলে ধরতে পোস্ট দিলেন? 

বাজার বুঝানোর জন্য তবে কি বিক্রেতার আইডি সো করার কোন প্রয়োজন হয়?

আবার দেখুন, ক্রেতা দাম চেয়েছে ধরে নিলাম বেশিই! 

তবে তার প্রয়োজনটা কি এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করে পোস্ট করার? বিক্রেতা তার কবুতরের দাম বেশি চাইতেই পারেন? আপনার সঠিক দামটি ৫০০ টাকা। হ্যা আপনি সেটি বলুন? পোস্ট করার কি প্রয়োজন ছিল?


আবার দেখুন, 

একই জিনিসের দাম যে, সময় গুণে পার্থক্য হয়। স্থান গুণে পার্থক্য হয়। জিনিসেরও পার্থক্যের কারণেও দাম কম বেশি হয়। এই বেসিক জ্ঞানেরও কতটা অভাব?

সরাসরি আক্রমন, ফেচবুকে পোস্ট।


✅ ক্রেতাঃ প্রাইচ প্লিজ।

বিক্রেতাঃ ৫০০০ টাকা।

ক্রেতাঃ ভাই কবুতর বুঝে তথা হাতে পাওয়ার পর ফুল টাকা দিব।

বিক্রেতাঃ ভাই বাকিতে আমি লেনদেন করি না। আর অপরিচিতদের কাছেতো নয়ই।

ক্রেতাঃ তাহলে আমিও অপরিচিতকে টাকা দিব কেন? আমিও যে আপনাকে চিনি না?

বিক্রেতাঃ ওকে ভাই সরি পারবনা এ পন্থায়।

ক্রেতাঃ ভাই আমি আর্মি বা বিদেশ থাকি। আর্মিরা বা বিদেশিরা টাকা মারে না।

বিক্রেতাঃ ভাই, আপনি যেটাই হন, আমি এ ব্যবস্থায় সেল দিবনা।

ক্রেতাঃ ভাই আমি অনেক ঠকেছি, এই, সেই  নানান কথা।

বিক্রেতাঃ সরি ভাই, এ ব্যবস্থায় পসিবল না, মাফ করবেন। সরল কথা আগে টাকা, পরে মালের হ্যান্ড ওভার। পারলে আসুন, না পরলে নয়।

ক্রেতাঃ ভাই আমিও আপনার পন্থায় টাকা আগে দিয়ে মাল নিব না।

বিক্রেতাঃ ওকে ভাই ধন্যবাদ।

ক্রেতাঃ আবার, আপনার ঠিকানা দিন।

বিক্রেতাঃ ঢাকা, বাসাবো।

ক্রেতাঃ ফুল ঠিকানা দিন।

বিক্রেতাঃ আপনাকে পরামর্শ দেই, আপনি যখন আমাকে চিনছেন না? আমার আইডির স্কিনসট নিয়ে আপনার আইডিতে একটা পরিচিতি পোস্ট দেন যে উক্ত আইডির সাথে আপনি লেনদেন করতে চান। তার সাথে লেনদেন করা যাবে কিনা?

তখন লেনদেন করা যাবে কি যাবে না। আপনি কমেন্টে ইনফর্ম পাবেন। এটি হল বিক্রেতার পরিচয় পাওয়ার উত্তম পন্থা।


অতপর ক্রেতা এটিও মেনে নিবেন না? তাকে যেন আমি চিনে নিই এমন প্রস্তাব।

অতপর বিভিন্ন ম্যাসেজিং গ্রুপে বিক্রেতার আইডির স্কিনসট দিয়ে সমালোচনা। বিক্রেতা কেন তাকে, টাকা ছাড়া কবুতর দিল না? তার বন্ধুবর্গরাও ঐ একই তালে তাল। তাহলে বলুনতো এরা কারা?


ক্রেতার বুঝা উচিত, বিক্রেতা চিনছে না তাই মাল দিবে না টাকা ছাড়া। 

কিন্তু ক্রেতার জন্য ঐ অবিকল যুক্তি কার্যকর কিনা? ক্রেতা কেন অপরিচিতর থেকে টাকা আগে পে করে মাল নিবে? এটা কি কোন যৌক্তিক কথা?

আপনি দোকানিকে টাকা আগে না দিলে কি মাল পান? কখনো পেয়েছেন? না পাওয়া সম্ভব? দোকানি কেন আপনার খোজ নিতে যাবে?

শুনুন, বিক্রেতার জন্য ক্রেতাকে চিনে নেবার কোন প্রয়োজন নাই। ক্রেতাকেই বিক্রেতাকে খুজে নিতে হয়। দোকানদার বাসা বাড়িতে হেটে যায় না। বাসা বাড়ির লোকদের দোকানে হেটে যেতে হয়। দোকানিকে চিনতে হয়। 

দোকানির কাস্টমারকে চিনবার কোনই প্রয়োজন পড়েনা। দোকানি টাকা পেলে ঐ ক্রেতার কাছে সেল দেয় ব্যাচ। ক্রেতা দোকানির কাছে যাবে কি যাবে না। মাল নিবে কি নিবে না। এটা ক্রেতার বিষয়, দোকানির না। 

এ জাতীয় অহেতুক বিহেবগুলি করে থাকে অনেক নতুন ক্রেতা। তখন, বিক্রেতার থেকে এদের দিকে চরম সহোযোগিতা আসে।


✅ ক্রেতা কিছু টাকা অগ্রিম করলেন, একটি মাদী কবুতর নিবেন বলে।

কদিন পর বললেন, তার নরটি মারা গেছে (যার জন্য বিক্রেতার থেকে নরটি কনফার্ম করেছিলেন)।

তারও কদিন পর বললেন, ভাই সরি কবুতরটি নিব না, টাকাটা ব্যাক দিন।

প্রশ্ন, আপনার কবুতর বেঁচে থাকা বা মারা যাওয়ার সর্তে কি কবুতর সেল হয়েছে? নাকি কবুতরের টাকা অগ্রিম হওয়ায়, অন্যত্র সেল না করে আপনার জন্য রেখে দিয়েছে? এই যে সঠিক সময়ে বিক্রেতার বিক্রিত মালের টাকা পেলনা। মালটি তিনি  ডেলিভারি দিতে পারলেন না। এ দায় কি বিক্রেতার? এই যে ওয়াদা করে, ওয়াদা না রাখা, এটি চরম ধৃষ্টতা! 


✅ আমি ৪ বার এক আর্মি ভাইয়ের জন্য ইয়োলো সিরাজি কবুতর রেখে দিয়েছি কিন্তু দিতে পারিনি। পরে আমাকে কখনো বলেই না, আমি নিতে পারছি না। এরা আসলে টাকাটাকে বেশি চিনে। সম্মান এদের কাছে কোন বিষয় না। এটাকে এরা সম্মানহানীকর মনে করে না। টাকা পকেট থেকে না সরলেই এদের তৃপ্তির ধন ভান্ডার রক্ষিত হয়। 

অন্যদিকে আমি দেশি লোক তাই অগ্রিম না নিয়ে, রেখে দিই। কিন্তু কবুতর তিনি ৪ বারে একবারও কবুতর নেননি।

অতপর অন্য কবুতরের জন্য নক দিলে, আমি তাকে না করেছি। বলেছি দেশি ভাই, ভাল থাকেন, ভাই বন্ধু থাকেন এটাই ভাল। কবুতর লেনদেন করে, সম্পর্ক নষ্ট করতে চাই না।


✅ নতুন পালক, সে যদি কখনো বুঝে যায়, কবুতরের ফ্রেশ মার্কিং কি। তবে পাহাড় সমুদ্র এক করে ফেলবে চষে। হাজারও বিক্রেতার কাছে হানা দিবে, তার ফুল ফ্রেশ কবুতর চাই ই চাই। এখানে এই যে বিক্রেতাকে হ্যারেসমেন্ট❗

কবুতর কি হাতের মোয়া বা হাতের পুতুল, যেমন ইচ্ছা তেমনই তৈরী করলাম?

দুটি বেবীই যে ১০০তে ১০০ মার্কিং নিয়ে জন্মায়

না, এটি সে বুঝ কোন ভাবেই নিবে না। আর এটি বিশিষ্ট কিছু অঞ্চলের হয়, তবে বিক্রেতার চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়বে।


তো এই নানান আাচারিক কারণেই আজ নতুনেরা ক্ষতিগ্রস্থ। ফলে পুরাতনদের করণীয় কি?


প্লিজ ঘটনাগুলি কারো সাথে কাকতালীয় ভাবে মিলে গেলে ক্ষমা করবেন। কাল্পনীক ভাবেই ঘটনাগুলি তুলে ধরার চেষ্টা মাত্র।


Writer:-

Badrul Alom 

                        RRm Pigeon loft Norail

Admin:-Fantail Pigeon Association Of Bangladesh

 Basabo, Dhaka, Bangladesh



আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান  মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ

 *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ