Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

কবুতর পালনে ঔষুধ ব্যবহারে সর্তকতা ও করণীয়।

অলাইনে কবুতরের চিকিৎসা বিষয়ক বা মেডিসিন বিষয়ক কিংবা কবুতরের পরিচর্যা বিষয়ক  ছোট ছোট পরামর্শ মূলক যে পোস্ট গুলি পাওয়া যায় তা থেকে নতুন পালকরা যেমন উপকৃত হয় তেমনি বিভ্রান্ত ও কম হয়না।কেননা বিভিন্ন মেডিসিনের সমন্বয়ক একটা মাসিক কোর্সের তালিকা হর হামেশাই পাওয়া যায়,
যেখানে উপকারিতা গুলি গুরত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এসমস্ত ওষুধের সাইড ইফেক্ট গুলি এরিয়ে যাওয়া হয়। অবশ্য এটা বিভিন্ন মেডিসিন কম্পানিও  তাদের মেডিসিন বিক্রির সার্থে বিষয় গুলো এরিয়ে যায়।

যেমনঃ-  ভিটামিন,ক্যালসিয়াম কবুতরের জন্য প্রয়োজন আছে এবং উপকারীতাও আছে বটে,কিন্তু অপ্রয়োজনে মাত্রা অতিরিক্ত ব্যবহার করলে সাইড ইফেক্ট ও আছে। মনে রাখা উচিত কবুতরের জন্য অপ্রয়োজনে অতিমাত্রায় মেডিসিন ব্যবহার করলে উপকারিতার চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশী থাকে এবং সেটাই স্বাভাবিক।

অনেক নতুন পালকের মেডিসিন ব্যবহার বিষয়ক অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হই,,, বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জনকে বুঝিয়েছি কেউ কেউ বুঝেছে আবার কেউ উল্টাউ বুঝেছে।যারা উল্টা বুঝেছে তাদের ধারনা ভিটামিন ক্যালসিয়াম প্রতিমাসে না দিলে কবুতর পোষা সম্ভব না,কবুতর সুস্থ থাকেনা,
ঠিকমতো ডিম বাচ্চা করেনা,বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।

আমাদের দেশের পুরানো সিনিয়র এবং প্রফেশনাল কবুতর পালকরা কিংবা পুরানো পরীক্ষিত ব্রিডারেরা তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকার কারনে কখন কোন সময় কি ধরনের ভিটামিন দরকার এক রকমের মুখস্থকরা আছে। তাই তাদের অনলাইন থেকে শেখার কিছু নাই এবং  এধনের পোস্ট গুলির গুরুত্ব ও তাদের কাছে নাই।

কিন্তু একজন নতুন পালকের কাছে??? এই পোস্ট গুলির গুরুত্ব অনেক। আবার এ ধরনের পোস্টে বিভ্রান্ত হবার সম্ভাবনা ও কম নয়।

আমি বলবো বিভ্রান্ত হবার কিছু নাই নিজের মস্তিষ্ক ও মেমোরিকে  কাজে লাগান, যদি সঠিকতর মনে করেন। তবেই এগুলি ফলো করুন অন্যথা আপনার কবুতর আপনার যা ভালো লাগে সেই মোতাবেক চালিয়ে যান।

পোস্টের পরামর্শ গুলি একান্ত আমার নিজ অভিজ্ঞতা থেকে লেখা অন্যকারো জন্য বাধ্যতামুলক নয়।

কবুতরের জন্য সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে ভিটামিনের যতোটা প্রয়োজন তার চেয়ে বেশী জানা প্রয়োজন, কোন ভিটামিনের কি কার্যকারিতা এবং ব্যবহারিক সঠিক নিয়ম। কারন আমাদের দেশে যে ভেটেনারি মেডিসিন বা ভিটামিন পাওয়া যায় তা স্পেশালি শুধু মাত্র কবুতরের জন্য নয়।
এগুলি সবি গরু- মহিষ -ছাগল -হাঁস- মুরগী -কুকুর- বিড়ালের জন্য তৈরি এবং বডি ওয়েট অনুযায়ী প্রকারভেদে নিয়ম নির্ধারন করে নিয়ম লেখা থাকে।

আমাদের দেশে বেশীরভাগ কবুতর পালক শুধু শখের বসে কবুতর পোষে। বিশেষকরে নতুনরা। অনেক সীমাবদ্ধতা থাকার কারনে বাসার বারান্দায় কিংবা ছোটখাটো কোনো আবদ্ধকর যায়গায় অলওয়েজ  খাঁচায় আটকিয়ে কবুতর পোষে।
এবং ১৭ থেকে ২২ আইটেমের খাবার ও মাসিক ভিটামিন উপরে নির্ভর করেই সফলতা পেতে চেস্টা করে।

কিন্তু উন্নত দেশে এর পুরোই বিপরীত, সেখানে কবুতর পোষার প্রথম সর্ত হলো পরিবেশসম্মত আবাস্থল,কবুতরের ফিটনেস ধরে রাখার জন্য ফ্লাইং জোন।
আর আমাদের দেশে লক্ষ টাকা দামের কবুতরকে এই ১৭থেকে ২২ আইটেমের খাবারের সাথে ৩০ টাকা দামের নিম্ন মানের গ্রিট খেতে দেয়। যেই গ্রিটে ইটের গুড়া ছাড়া আর কিছুই নাই, অথচ খাঁচায় আটকানো কবুতরের জন্য ভালো মানের গ্রিট অত্যান্ত প্রয়োজন ও কার্যকরী।

অতিমাত্রায় অপ্রয়োজনে খাঁচায় আবদ্ধ কবুতরকে একটার পর একটা মাসিক ভিটামিন খাওয়ালে কবুতরের শরীরে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ফ্যাট তৈরি হয়,,
কারন সব ধরনের ভিটামিন গুলিতে ফ্যাটের মিশ্রণ থাকে।
যা অলওয়েজ খাঁচায় পোষা কবুতরের জন্য উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমান বেশী হয়।
যেমনঃ- কবুতর শারীরিক ভাবে ভারী হয়ে যায় শরীরে বাড়তি ফ্যাটের কারনে পানি সৃষ্টি হয়।
পায়ের তালু বা পায়ের গিরা হালকা ফুলে উঠতে পাড়ে,হঠাৎ ডিম পাড়া বন্ধ করে রেস্টে চলে যায়,কিংবা ডিমে তা দেয়া বন্ধ করে দেয়,বাচ্চাকে খাওয়ানো বন্ধ করে দেয়,রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়,কবুতরের শারীরিক ফিটনেস নষ্ট হয় দেখতে সাস্থবান ও স্বাভাবিক মনে হলেও দীর্ঘদিন আবদ্ধ খাঁচায় থেকে শারীরিক ফিটনেস নষ্ট হয়ে অসুস্থ রুগীই বলা যায়।
এগুলি সবি কবুতরের শারীরিক ফিটনেস সমস্যার কারনে সৃষ্টি হয়।

নতুন পালকদের ধারনা মাসিক কোর্স করালাম ভালো খাবার দিলাম দামি দামি ভিটামিন দিলাম কবুতর ফিটনেস হারাবে কেনো??

এর উত্তর একটাই  অতিরঞ্জিত কোনো কিছুই ভালো না, এডভান্স মেডিসিন ব্যাবহারের মাধ্যোমে কোনো রোগ বালাই থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই।
 কবুতরের ক্ষেত্রে ৮০% রোগ হয় পানিবাহিত আর ২০% রোগ হয় অযত্ন অবহেলা সঠিকতর পরিচর্যা পরিবেশসম্মত আবাস্থল  ঘাটতি  কারনে। এবং কিছু ইনফেকশনাল ভাইরাস। ২০ % রোগের চিকিৎসায় সরাসরি ভেট স্পেশালিষ্টের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরী।

এতক্ষণ মেডিসিনের অপকারিতা বিষয়ক আলোচনা করেছি এবার আসেন কি কি কারনে উপকারী মেডিসিন গুলি কেনো অপকারী হয় এই বিষয়ে কিছু কথা বলি।

কবুতরের জন্য যখনি কোনো মেডিসিন কিংবা ভিটামিনের দরকার হয়,তখনি সতর্কতা  অবলম্বন করা জরুরী,
কোনো একটা ভিটামিন ৫ থেকে ৭ দিন ব্যবহার করবেন তখন ঐ ভিটামিন কবুতরের শরীরে এ্যাডজাস্ট হবার জন্য মিনিমাম ১০ দিনের জন্য পরবর্তী ভিটামিন বা অন্য কোনো মেডিসিন বন্ধ রাখবেন এবং ন্যাচারাল পানি ব্যাবহার করবেন। এবং কবুতরকে শারীরিক এক্সারসাইজ করার জন্য ঐ ১০ দিন উন্মুক্ত স্থানে ২থেকে ৪ ঘন্টা ছেরে রাখবেন।মনে রাখবেন যতো ভালো খাবার খাবেন ততো বেশী স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া জরুরী। নিজেকে দিয়ে বিচার করেন আপনাকে যদি একটা ঘড়ে বন্দি করে বারোমাস ভালো ভালো খাবার আর নামী দামী কোম্পানির ভিটামিন খাওয়ালে আপনার শারীরিক অবস্থা কি হবে? আপনি কি স্বাভাবিক শরীরের মানুষ  থাকবেন?
নাকি সুন্দর চেহারায় একজন অসুস্থ মানুষে পরিণত হবেন।
দেখতে সুন্দর হলেও ভিতরটা অসুস্থ।

সবশেষে এটাই বলবো দেশি বলেন আর বিদেশি বলেন এমন কোনো ভিটামিন বা মেডিসিন নাই যা কবুতরকে এডভান্স খাওয়ালে  কোনো রোগব্যাধি হবেনা।

তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে  কবুতরের শারীরিক ফিটনেস ভালো থাকে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ৮০% রোগ থেকে রেহাই পায়,,যা এই পোষ্টের উপরের দিকে বিস্তরিত- বলা আছে,,,


মুল লেখকঃ- খন্দকার আসাদুজ্জামান কাজল।
Admin
Only fancy pigeon club in bangladesh,  সম্পূর্ণ পরামর্শটি তাঁর নিজ অভিজ্ঞতা লব্ধ।

আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান  মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD
#pigeon #কবুতর #feralrockdove
 *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ