কবুতর এমন একটা প্রাণী যা কিনা হাজার বছর ধরে মানুষের পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থান দখল করে রয়েছে।শুধু তাই নয় কবুতরের বিষয়ে রয়েছে হাজারো ইতিহাস। যদিও আমরা এই বিষয় গুলো সম্পর্কে এলোমেলো ভাবে হলেউ কিছুটা ধরনা রাখি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা কবুতর বিষয়ক এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। হয়ত এই তথ্য গুলো আমরা অনেকেই জানি। তবুও আজ এই তথ্য গুলোকে আমরা ধারাবাহিক ভাবে তিনটি ভাগে ভাগ করে উল্লেখ করবে। যা হয়ত নতুন বা পুরাতন অনেক কবুতর পালকদের উপকারে আসবে বলে আশাবাদী। চলুন তাহলে তথ্য গুলো জানা যাক।
ক) কবুতর।
খ) কবুতরের ডিম।
গ) কবুতরের বাচ্চা ।
চলুন তাহলে তথ্য গুলো জানা যাক।
ক) কবুতরঃ-
১। কবুতর হলো সবথেকে প্রাচীনতম সৌখিন গৃহপালিত পাখি।
২। বন্য কবুতর বা ফেরাল রক কবুতরকে পৃথিবীর সমস্ত কবুতরের বংশধর হিসেবে ধরা হয়।
৩। দুইটি কবুতর মিলে একটি জোড়া হয়। জোড়াতে একটি মাদি অর্থাৎ স্ত্রী ও একটি নর অর্থাৎ পুরুষ কবুতর থাকে।
৪। কবুতর সারাজীবন একই সঙ্গীর সাথে থাকতে পছন্দ করে।
৫। জোড়ায় থাকা কবুতর সমান অংশগ্রহণে তাদের বাচ্চা লালন পালন করে।
৬। কবুতরের নর ও মাদি উভয়েই বাচ্চা কে প্রতিপালন এর জন্য ক্রপ মিল্ক তৈরির তৈরি করে। যা শুধু মাত্র ফ্লেমিঙ্গ ও উন্নত জাতের পেঙ্গুইন এর মধ্যে দেখা যায়।
৭। কবুতর সাধারণত ১০ - ১৫ বছর বেঁচে থাকে।
৮। পাখিদের মধ্যে একমাত্র কবুতর কেই সরাসরি যুদ্ধে আংশগ্রহনের জন্য বীর উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।
৯। কবুতরের সৃতি শক্তি এতটাই প্রখর যে অনেক বছর পরও সে তার পূর্বের বাসস্থান চিনতে পারে।
১০। কবুতর হলো পৃথিবীর সব থেকে দ্রুত পোষ মানা পাখি। যারা মানুষের সহচার্যে থাকতে ভালো বাসে।
১১। কবুতর সাধারণত নিজের তৈরি করা বাসায় ডিমে বসতে স্বাদছন্দবোধ করে।
১২। কবুতর সুস্থ থাকার জন্য তারা নিজেরাই নিয়মিত গোসল করে।
১৩। কবুতর দীর্ঘ দিন এদের রোগ লুকিয়ে রাখতে পারে। এমন কি মৃত্যু অবধি।
১৪। কবুতর ঘরে ফেরার জন্য দুই ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। ম্যাপ সেন্স ও কম্পাস সেন্স। ম্যাপ সেন্সের ক্ষেত্রে তারা যেখানে বাস করে সেখানকার ভূমির চিহ্ন ও গন্ধ কাজে লাগায়। কম্পাস সেন্সের ক্ষেত্রে সূর্যের অবস্থান ও গতিবিধির ওপর নির্ভর করে।
১৫। কবুতর ঝাঁক বেঁধে থাকতে পছন্দ করে। এই ঝাঁকের নেতৃত্ব থাকে একটি কবুতর। বাকিরা তাকে অনুসরণ করে।
১৬। কবুতর কখনোই ভুলে না এবং ক্ষমাও করে না।কবুতর সম্পর্কে সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে বন্য কবুতর মানুষের চেহারা চিনতে পারে। তাদের বোকা বানানো খুব কঠিন।
১৭।কবুতর ৬০০০ ফিটের ও বেশি উচ্চতায় সাচ্ছন্দ্যে উড়তে পারে।
১৮। কবুতরের উড়বার গতি ঘন্টায় গড়ে ৭৭.৬ মাইল ( ১২৫.৮৬ কিলোমিটার) থেকে ৯২.৫ মাইল (১৪৮.৮৩ কিলোমিটার)।
১৯। কবুতর ১ দিনে ৬০০-৭০০ মাইল ( ৯৬৫-১১২৬ কিলোমিটার) পথ অতিক্রম করতে পারে।
২০। কবুতর মানুষের মত সব রং চিনতে পারে।
২১। কবুতর সাঁতার কাটতে পারে না তবে সমস্ত পালক ভেজা অবধি পানির উপর ভেসে থাকতে পারে।
২৩। কবুতরের কোন ব্লাডার এবং মুত্রথলি নেই।
২৪। কবুতর রাতে চোখে খুব কম দেখে।
২৫। কবুতরের জিহ্বা লম্বা ও শরু।
২৬। কবতর সব ধরনের আবহাওয়া ও পরিবেশে খাপখাওয়াতে পারে।
খ) কবুতরের ডিমঃ-
১। কবুতর সাধারণত ৫ মাস বয়সে প্রথমবার ডিম দেয়। সর্বচ্চ ৭ মাস সময় নিতে পারে।
২। কবুতর সাধারণত ৪৮ ঘন্টার ব্যাবধানে দুইটি ডিম দিয়ে থাকে।এবং ৪০-৫০ দিনের ব্যবধানে আবার নতুন ডিম দেয়।
৩। কবুতর সাধারণত বিকেলে বা সন্ধ্যার পর ডিম দেয়।
৪। সাধারণত ৪ থেকে ৫ দিনে ডিম জমতে শুরু করে।
৫। প্রথম ডিম দেয়ার পর মা কবুতর ওই ডিমের উপর দাঁড়িয়ে থাকে অর্থাৎ ডিমে তাপ দেয় না। এতে আপনি বুঝবেন কবুতরটি দ্বিতীয় ডিম দিবে। যদি দেখেন প্রথম ডিমে প্রথম থেকেই তা দিচ্ছে তবে বুঝবেন কবুতরের ২য় ডিম দেবার সম্ভাবনা নেই।
৬। মাঝে মাঝে কবুতর তিনটি ডিমও দিয়ে থাকে। তবে তৃতীয় ডিমটি প্রথম দুটি ডিমের তুলনায় ছোট হয়।
৭। কবুতরের একটা ডিমের গড় ওজন ১৪ - ১৫ গ্রাম হয়ে থাকে।
৮। ডিম দেয়ার পর নরমালি মা ও বাবা কবুতর পালাবদল করে ডিমে তা দেয়।
৯। কবুতরের ডিম সাধারণত ১৭ -১৯ দিনে ফুটে।
১০। কবুতরের ডিম যদি গরম পানিতে সিদ্ধ করা হয় তবে তা কাঁচের মত সচ্ছ দেখায়।
১১। ডিম ধরলে বাচ্চা হবে না এটা একটা কুসংস্কার।
গ) কবুতরের বাচ্চাঃ-
১। সাধারণত কবুতর ডিম দেবার ১৭-১৯ তম দিনে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।
২। সাধারণত কবুতরের বাচ্চা ডিমের একদম মাঝখান থেকে ভেংঙ্গে বের হয়।
৩। ১ দিন বয়সের কবুতরের বাচ্ছার ওজন গড়ে ১২/১৩ গ্রাম হয়।
৪। সাধারণত বাচ্চা ফোঁটার ৪ থেকে ৫ দিনে বাচ্চার চোখ খোলে।
৫। কবুতরের বাচ্চার পরিপূর্ণ হতে ২৬ থেকে ২৮ দিন সময় লাগে। এবং নিজে নিজে খেতে পারে।
৬। কবুতরের বাচ্চাকে স্কুইকার বলে।
৭। কবুতরের বাচ্চা ফোঁটার প্রথম ৪ দিন শুধু এক ধরনের দুধ খেয়ে বেঁচে থাকে, একে পিজন মিল্ক বা ক্রপ মিল্ক বলে। এবং এটি ৭ দিন পযন্ত চলে।
৮। কবুতরের বাচ্চা উড়া শিখতে ২৫- ৩০ দিন সময় লাগে।
আপনি আরও পড়তে পারেন:
কবুতরের ঠান্ডা জনিত সমস্যা চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার।
অসুস্থ কবুতরের চিকিৎসায় প্রতিকারের পাশাপাশি প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব এবং পরবর্তী পদক্ষেপ।
কবুতরের ব্রিডিং বিরতি বা রেষ্ট কেন দিবেন ? ব্রিডিং বিরতি বা রেষ্ট এর প্রয়োজনিয়তা।এর বাইরে আপনার কোন তথ্য জানা থাকলে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।
আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ
তথ্য সংগ্রহে এবং লেখকঃ-
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD
*******Thank You *******
8 মন্তব্যসমূহ
তথ্য সুত্র দেয়া উচিৎ ছিল
উত্তরমুছুনআপনার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে আপনার মেইলটি সিন করে কমেন্ট করুন, যাতে পরবর্তীতে বিভিন্ন পরামর্শের জন্য আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারি।
মুছুনপোষ্টটি পড়ে অনেক উপকৃত হলাম, ধন্যাবাদ।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ আমাদের সাইটি ভিজিট করার জন্য। আমরা চেষ্টা করেছি কিভাবে সাধারণ কবুতর পালক গণ এখান থেকে উপকৃত হতে পারে এবং কিভাবে আরও তথ্য সমৃদ্ধ একটি কবুতর বিষয়ক সাইট সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা যায়। ধন্যবাদ সাইটি ভিজিট করার জন্য।
মুছুনশুনেছি কবুতরের বাসায় নাকি সাস ফেলা যায় না?
উত্তরমুছুনপ্রিয় পাঠক। আমাদের সমাজে কবুতর পালন নিয়ে অনেক কুসংস্কার বিদ্যামান। আমরা অন্য একটি পোস্টে এই বিষয়ে আলোচনা করতে চেষ্টা করেছি।
মুছুনআশসালামুআলাইকুম মাশাআললা খুব সুনাম আপনাকে ধন্যবাদ আমাদের অবিভক্ত বাংলার মানুষ তবে ভারতে।সালাম।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ আমাদের সাইটি ভিজিট করার জন্য। যে কোন সময় লাইভ সাপোর্ট পেতে আমাদের পেজে ম্যাসেজ করুন। https://www.facebook.com/pigeonhealthcarebd/
মুছুনThanks for Commenting! please follow our blog and see update continue