কবুতরের খামারে মাশার উপদ্রব একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এই সমস্যা দূরীকরণে দ্রুত কার্যকারী পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। নইলে মশার কামড়ে কবুতর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে কবুতরের বাচ্চা পক্সে আক্রান্ত হতে পারে এছাড়া বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবার পেছনে মশা পরক্ষ ভাবে দায়ী।তাই খামারকে রোগ মুক্ত রাখতে এবং সুস্থ বাচ্চা পেতে খামারের জরুরী ভিত্তিতে মশা দূরীকরণ জরুরী। আমরা খামারের মশা দূরীকরণে বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। চলুন মশা দূরীকরণে কি কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে এই বিষয়ে কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।আমি মশা দূরীকরণকে ২ টা ভাগে ভাগ করে আলোচনা করবো।
১/ প্রতিরোধ
২/ প্রতিকার
****প্রতিরোধঃ-
মশা দূরীকরণের পদ্ধতি গুলো প্রয়োগের আগে প্রয়োজন খামারে মশা দূরীকরণের জন্য কার্যকারি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। চলুন জেনে নেয়া যাক খামারে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কি কি কাজ করা প্রয়োজন।
ক)খামারের চারপাশ পরিস্কার পরিছন্ন রাখাঃ- খামারের চারপাশ পরিস্কার পরিছন্ন রাখা মশা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খ)খামারের ভেতরে পরিস্কার পরিছন্ন রাখা। যাতে কোথাও ময়লা আবর্জনা জমে না থাকে।এবং মশা কোথাও ডিম পারতে না পারে এই জন্য খামারে ভেতরে সুন্দর ভাবে পরিস্কার পরিছন্ন রাখা।
গ) মাঝে মাঝে খামারে বহিঃ পরজীবি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্প্রে ব্যবহার করা। যাতে করে খামারের কোথাও মশা ডিম পারতে না পারে।
ঘ) খামারের মধ্যে বা ভেতরে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সে বিষয় টা খেয়াল রাখা।
**** প্রতিকারঃ-
খামারে যদি মশা দূরীকরণের কার্যকারী পদক্ষেপ নেয়া হয়ে থাকে তবে প্রতিকারের প্রয়োজন হয় না তবুও যদি মশা দূরীকরণ সম্ভব না হয় তবে নিচের পদ্ধতি গুলোর যে কোন একটি ব্যবহার করা যেতে পারে চলুন জেনে নেই মশা দূরীকরণে কার্যকারি পদক্ষেপ গুলো।
ক) লেবু ও লবঙ্গ এর ব্যবহারঃ-একটা লেবু মাঝ থেকে কেটে নিন। এরপর কাটা লেবুর নরম অংশে ৮ থেকে ১০ টি লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর টুকরোগুলো একটি প্লেটে রেখে ঘরের কোণায় রেখে দিন। এবার ম্যাজিক দেখুন, কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরে কোনো মশা নেই। ৩ থেকে ৪ দিন পর লেবুটি নষ্ট হয়ে গেলে ওটা ফেলে দিয়ে আবার নতুন লেবু একই পদ্ধতিতে দিন।
খ) রসুনের কোয়ার ব্যবহারঃ- কয়েকটি রসুনের কোয়া থেতলে পানিতে সেদ্ধ করতে হবে। উক্ত পানি সারা ঘরে স্প্রে করে দিলেই মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
গ) ধুপ এর ব্যবহারঃ- প্রতিদিন সন্ধ্যায় খামারে নির্ধারিত মাত্রায় ধুপ দিতে পারেন এতে মশার উপদ্রব কমে যাবে।
ঘ) ন্যাপথলিনের ব্যবহারঃ- একটি কাপরে ন্যাপথলিন বেঁধে সেটি খামেরের বিভিন্ন অংশে বেঁধে রাখুন এতে মাশার উপদ্রব কমে যাবে।
ঙ) পুদিনাপাতার ব্যবহারঃ- খামারে একাধিক জায়গাতে কিছু পুদিনাপাতার গাছ রেখে দিন এতে মশা চলে যাবে।
চ) ধনিয়ার গুড়া সঙ্গে নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়োর ব্যবহারঃ- সবগুলো একত্রে রাতে ভিজিয়ে রেখে সেটি সকালে খামারে স্প্রে করুন দেখবেন মশা চলে যাবে। এভাবে প্রতিদিন একবার করুন।
ছ) হলুদ বা নীল বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবহারঃ-
ঘরের মধ্যে মশার উৎপাত কমাতে চাইলে, ঘরের বৈদ্যুতিক আলোটি হলুদ বা নীল সেলোফনে জরিয়ে দিন । ফলে হলুদ বা নীল আলো হবে। দেখবেন মশা কমে গেছে, কারণ মশা হলুদ বা নীল আলো থেকে দূরে থাকতে চায়। চাইলে বাজারে মশা দূরীকরণ লাইট পাওয়া যায় সেটি ব্যবহার করতে পারেন।
জ) চা-পাতা ও নিমপাতার ব্যবহারঃ-
ব্যবহৃত চা-পাতা ফেলে না দিয়ে ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো চা পাতা পোড়ানো ধোঁয়ায় ঘরের সমস্ত মশা, মাছি পালিয়ে যাবে। এছাড়া নিমপাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হয় তা মশা তাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর।
ঝ) কর্পূর ও পানির ব্যবহারঃ- একটি পাত্রে ২ চামচ কর্পূর নিন এতে একটি পানি মিশিয়ে ভালোভাবে মেশান। এবার মেশানো দ্রবণ টি খামারের নিরাপদ জায়গাতে রেখে দিন।জাতে কবুতর যেন এটি খেয়ে না ফেলে।
মশা দূরীকরণে উপরের পদ্ধতি গুলো প্রয়োগের ফলে আশা করি আপনার খামার মশা মুক্ত হবে। তবে মনে রাখবেন খামার মশা মুক্ত রাখতে পূর্বে মশা দূরীকরণ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারী পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।
প্রয়োজনীয় পোষ্ট পেতে আমাদের ব্লগটি Follow করুন এবং আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকবেন এবং কোথাও ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।
আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ
তথ্য সংগ্রহে এবং লেখকঃ-
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD
*******Thank You ****
0 মন্তব্যসমূহ
Thanks for Commenting! please follow our blog and see update continue