ডিম আটকানো বা Egg binding কবুতরের মারাত্মক সমস্যা গুলির মধ্যে অন্যতম একটি রোগ, সময় মত এর প্রতিকার না নিলে কবুতর মারা যাবে।এই সমস্য মূলত ভিটামিন - ডি,ই, খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম এবং সেলেনিয়ামের অভাবে হয়ে থাকে।ডিম দেয়া কবুতর যখন ডিম দেবার জন্য প্রস্তুত হয় কিন্তুু ডিমের নালি থেকে ডিম বাইরে বের করতে পারেনা নালির শেষ অংশে বা নালির যে কোন অংশে এসে ডিম আটকে যায়।
অনেক কারনেই এটা হতে পারে উপরোক্ত কারন গুলি ছারাও ভিটামিন, অনুপুষ্ট সুষম খাদ্য,খনিজ পদার্থ সহ অনান্য অপুষ্টি জনিত কারনে হয়ে থাকে। ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ গুলি কবুতরের ডিম পারার সময় পেশি সংকচন ও প্রসারন এর কাজ করে এবং ডিমকে বাইরে আসতে সাহায্য করে।যখন কবুতরের শরীরে এসব প্রয়োজনীয় উপাদানের অভাব দেখাদেয় তখন ডিম্বনালিতে ডিম আটকে যায়।এছাড়াও নরম ডিম,অনুপযুক্ত ডিম, খাদ্য তালিকাগত ক্যালসিয়াম এর অনুপযুক্ত মাত্রা থেকে প্রসব হতে পারে। এছারাও অতিরিক্ত ডিম নেয়া,অনুপযুক্ত পরিবেশ ও ডিম আটকানোর কারন হতে পারে।
লক্ষণ সমুহঃ
১. গা ফুলিয়ে বসে থাকা।
২. দ্রুত শ্বাস নেয়া।
৩. পিছনে ফোলা ভাব।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য।
৫. পাকা ঝুলে পরা।
৬. তলপেট ফোলা ।
৭. আকস্মিক মৃত্যু।
৮. লেজ ছেরে দেয়া।
৯. ডিপ্রেশন।
১০. পা অবস বা পক্ষাঘাত।
ডিম আটকানোর কারন সমূহঃ
১. ভিটামিন - ডি,ই, খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম এবং সেলেনিয়ামের অভাব।
২. অনুপযুক্ত ডিম পারার পরিবেশ।
৩. বিরতিহীন ভাবে ডিম পারা।
৪. অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ডিম দেয়া।
৫. ডিম দেবার সময় কবুতরকে বিরক্ত করা।
৬. ডিমের আকার বড় হওয়া।
৭. নর ছারা ডিম দেওয়া।
৮. অন্য কবুতর দ্বারা বিরক্ত হলে।
৯. বিশেষ কিছু রোগের সংক্রমণ।
১০. অসুস্থ থাকার পর পরিপূর্ণ সুস্থ হবার আগেই ডিম পারা।
১১. জরায়ুর সংক্রমণ ।
১২. জরায়ুর টিউমার ।
প্রতিরোধে করনীয়ঃ
১. সঠিক মাত্রার ভিটামিন, মিনারেল,ক্যালসিয়াম ও অনান্য উপাদান প্রয়োগ করা।
২. ডিম পারা কবুতরকে ডিম পারার ভিটামিন বি কমপ্লেক্স দেয়া।
৩. মাঝে মাঝে কবুতর কে ডিম দেয়া থেকে বিরতি দেবার ব্যবস্থা করা।
৪. ডিম দেয়ার জন্য নিরিবিলি জায়গা নির্ধারন করা।
৫.খামার এলাকায় উজ্জ্বল আলো ব্যবহার না করা।
৬. খাঁচা অবস্থান পরিবর্তন করা।
৭. সুষম খাদ্য পরিবেশন করা।
সতর্কতাঃ
নিজে দক্ষ না হলে আঙ্গুল বা চাপ দিয়ে ডিম বের করার চেষ্টা করবেন না, এটা আপনার কবুতর গুরুতর বা স্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। নালীর ভিতর সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ টিস্যুর সংক্রমণ বা ক্ষতি হতে পারে। বা ভিতরে ডিম ভেঙ্গে স্থায়ী সংক্রমণ হতে পারে। যা তৎক্ষণাৎ চিকিত্সা না করে ছেড়ে যাওয়া হলে মৃত্যুও হতে পারে।
চিকিৎসাঃ
১. হোমিও Pulsatilla mother, ৩ ফোটা অল্প একটু পানির সাথে ২ ঘণ্টা পর পর দিতে হবে।
২. মাদি কবুতর কে হালকা একটু পরিশ্রান্ত করার ব্যাবস্থা করতে হবে।
৩. সন্দেহভাজন ডিমের আটকানোর ক্ষেত্রে মাদি কবুতরকে একটি উষ্ণ জায়গায় রাখুন এবং প্রয়োজনীয় সহায়ক যত্ন প্রদান করুন।
৪. গরম পানিতে গামছা/তোয়ালে ভিজিয়ে দিয়ে একটু সেঁকের মত ব্যাবস্থা করুন ।
৫. উষ্ণ জলে স্নান করানোর ব্যাবস্থা করতে হবে ।
৬. তেল দিয়ে পেছনের এলাকায় পেশী খুব সাবধানে ম্যাসেজ করুন, মেসেজিং করার সময় খুব সাবধান কারন চাপ লাগলে ডিম ভিতরে ভঙ্গ হতে পারে যা জীবন নাশক হতে পারে।
৭. পেছনে পিচ্ছিলকারক পদার্থ হালকা করে দিয়া যেতে পারে এটি ভাল সহায়ক হতে পারে।
৮. ডিমের সফল পাসিং এর জন্য স্যালাইনে পানি খাওয়ানোর বাবস্থা করতে হবে এবং অন্য কবুতর থেকে আলাদা করতে হবে ও শান্ত রাখতে হবে।
কবুতরের ডিম আটকে গেলে তা অতিদক্ষতার সাথে তা বের করে আনা সম্ভব কিন্তুু এতে কিছু ঝুকিও বিদ্যামান সুতরাং কবুতরের ডিম আটকে গেলে দ্রত অভিজ্ঞ কারে পরামর্শ নিন বা ভেটেরিনারি ডাক্তার এর পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা প্রদান করুন।
প্রয়োজনীয় পোষ্ট পেতে আমাদের ব্লগটি Follow করুন এবং আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকবেন এবং কোথাও ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।
আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ
স্ট্যাডি ও তথ্য সংগ্রহঃ বিভিন্ন রিসার্চ আর্টিকেল,পিজন রিলেটেড বই,ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা,বিভিন্ন খামারি ও ভেটেরিয়ানদের পরামর্শ।
তথ্য সংগ্রহে এবং লেখকঃ-
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD
*******Thank You *******
2 মন্তব্যসমূহ
ডিম আটকে গেছে কিনা কিভাবে বুঝব???
উত্তরমুছুনthanks
পোস্ট টি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন
মুছুনThanks for Commenting! please follow our blog and see update continue