Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

কবুতরের ম্যালেরিয়া -Pigeon Malaria কি? ম্যালেরিয়ার লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকার।


কবুতরের ম্যালেরিয়া রোগটি মূলত Poroto Zoan vires এর কারণে সংগঠিত একটি রোগ। কবুতরের শরীরে থাকা রক্ত চোষা মাছি ও অ্যানোফিলিস ( স্ত্রী মশা) এর মাধ্যমে এ জীবাণু কবুতরের রক্তে প্রবেশ করে এবং কবুতরের লাল রক্ত কণিকাকে ধিরে ধিরে নষ্ট করে দেয় ফলে কবুতর মৃত্যুর মুখে পতিত  হয়।এ রোগকে হেমাপ্রেটিস মলম্বিয়াও বলা হয়ে থাকে।

কবুতরের ম্যালেরিয়ার লক্ষণ গুলো সহজে প্রকাশিত হয়না তবে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ এর মাধ্যমে এটি সনাক্ত করা সম্ভব। এ রোগটি মূলত কবুতরের শরীরে বসবাস করা বহিপরজীবি দের মাধ্যমে এক কবুতর থেকে অন্য কবুতরদের মাঝে সংক্রমণ ঘটায়।

প্রাথমিকভাবে কবুতরের মাছি এবং মশা কে এ রোগের বাহক হিসাবে গন্য করা হয়ে থাকে সুতরাং ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ এর আগে বহিপরজীবি নিয়ন্ত্রন করা জরুরী। ইউরোপীয় বার্ড সংস্থা কতৃক পরিসংখ্যানে দেখাগিয়েছে প্রতিবছর  সারা বিশ্বে এ রোগের করানে অনেক পাখি বা কবুতর মৃত্যুবরণ করে।

ম্যালেরিয়া সংক্রমণ ছরানোর মাধ্যম সমূহঃ-
১. কবুতরের শরীরে থাকা রক্ত চোষা মাছি ও মশা ( অ্যানোফিলিস) এর মাধ্যমে।
২. অনান্য পরজীবি কিট পতঙ্গের মাধ্যমে।
৩. বহিরাগত পাখি বা কবুতরের গমনাগমন বা মেলামেশার এর মাধ্যমে।
৪. আক্রান্ত  কবুতরের লালা এর মাধ্যমে।
৫. আক্রান্ত কবুতরের গ্রহণকৃত খারার বা পানি এর মাধ্যমে।
৬. আক্রান্ত  কবুতরের মল বিষ্টা থেকে এই রোগ সংক্রমিত হয়।

কবুতের ম্যালেরিয়া হলে যে সকল লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারেঃ-

১. মুখ হাঁ করে শ্বাস নিবে।

২. বুকের নিচে পাতলা হাড্ডির কাছে লোম শূন্য ও প্রচুর খুস্কি দেখা যাবে।

৩. পালকের উজ্জলতা হারাবে।

৪. কবুতর কে ধরলেই সেটা সাদা সাদা ধরনের বমি করবে ও প্রচণ্ড হাঁপাবে।

৫. মুখের ভিতরে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ থাকবে।

৬.পাখা ঝুলে যাবে এবং উরার ক্ষমতা হারাবে।

৭.ঠোঁট  ফ্যাঁকাসে ও সাদা হয়ে যাবে।
৮. কবুতর চঞ্চলতা হারাবে।

৯. সামান্য শব্দেই ভীত হবে বা চমকে উঠবে।

১০. স্বাভাবিক এর চেয়ে কবুতরের  গায়ের তাপমাত্রা বেশী হবে।

১১. কবুতরে শরীরে রক্তাল্পতা প্রকাশ পাবে।

১২. কবুতরের অঙ্গহানি হতে পারে।

১৩. পায়খানা পাতলা হলুদ বা সাদা ও সবুজ মিক্স ধরনের থাকবে। অথবা সাদা জমাট আঠালো হতে পারে।

১৪. সাধারণত বাচ্চা, ইয়ং কবুতর ও ডিম পাড়া মাদী কবুতর বেশী আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

১৫. কবুতরের লিভার অনেক বড় হয়ে যাই, আর রক্ত কোষের সংখ্যা কমে যাবার ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই কবুতরের মৃত্যু ঘটবে।

ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রনে প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাঃ-

 ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত কবুতর আজীবন এই জীবাণু বহন করে ফলে এর প্রতিকার সহজ নয়।তবে সব থেকে উত্তম হলো ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা  যাতে করে ভবিষ্যৎত এ রোগের প্রাদূর্ভাব থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হয়। চলুন যেনে নেই ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে আমাদের করনীয় কি কি??????

১. খামারে জৈব নিরাপত্তা ব্যবাস্থা নিশ্চিত করা।

২. আক্রান্ত কবুতরকে দুরে সরিয়ে নেয়া।

৩. কঠিন হস্তে পরজীবি নিয়ন্ত্রণ করা।

৪. মাসে কমপক্ষে একদিন রসুন পানির দ্রবণ,থানকুনি পাতার দ্রবণ,অ্যাপেলসিডার,লেবু+ চিনি+ লবণ  এর দ্রবণ কবুতরকে খেতে দেয়া।

কবুতরের ম্যালেরিয়া হলে করনীয় ও চিকিৎসাঃ-

১. অসুস্থ কবুতরকে সুস্থ কবুতর থেকে আলাদা করে চিকিৎসা প্রদান জরুরী।

২. কবুতর অসুস্থ হলে দ্রুত অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি ডাক্তার বা এই রোগ সম্পর্কে অভিজ্ঞ এমন করো পরামর্শ আনুয়াযী চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরী।কেননা এই রোগ নির্ণয় করা বেশ কঠিন, কারণ  ম্যালেরিয়া রোগের কিছু কিছু লক্ষণ গুলো অন্যান্য রোগের লক্ষণের অনুরূপ হয়ে থাকে । সুতরাং খুব সাবধানতার সহিত রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা প্রদান জরুরী।

৩. কবুতরের ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসা একটু ধৈর্যশীলতা পরিচয় দিতে হয়।কেননা ম্যালেরিয়া হলে কবুতরের রক্ত কণিকা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ফলে কবুতর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারায় এই কারণে ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসা ৫২ দিন পর্যন্ত চালাতে হয়। এবং লাল রক্ত কোষ গুলো যাতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এই জন্য প্রচুর পরিমান আয়রন ও জিঙ্ক ভিটামিন জাতীয় খাবার দিতে হবে যাতে করে দ্রুত লাল রক্ত কোষ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

৪. অসুস্থ কবুতরের ব্যবহার্য খাবার পাত্র, পানির পাত্র, থাকায় জায়গা, ডিমের হাড়ি এবং আনুসঙ্গিক ব্যবহার্য সাথে সাথে জীবানু মুক্ত করা জরুরী।

প্রয়োজনীয় পোষ্ট পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকবেন এবং কোথাও ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ

স্ট্যাডি ও তথ্য সংগ্রহঃ বিভিন্ন রিসার্চ আর্টিকেল,পিজন রিলেটেড বই,ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা,বিভিন্ন খামারি ও ভেটেরিয়ানদের পরামর্শ।

তথ্য সংগ্রহে এবং লেখকঃ-
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD

   *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ