Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

কবুতরের অপুষ্টি এবং বিপাকীয় রোগ।



কবুতরের অপুষ্টি এবং বিপাকীয় রোগ গুলো মুলতো বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল ও খানিজ উপাদান,এনজাইম এর সল্পতার কারনে হয়ে থাকে, এসকল উপাদানে সল্পতা কবুতরের জন্য মারাত্মক হুমকি সরুপ।এবং যার ফলাফল প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে বহণ করতে পারে। সুতরাং এসকল প্রয়োজনীয় উপাদান সঠিক ভাবে প্রয়োগের মধ্য দিয়েই এই সমস্ত রোগ এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভাব। চলুন কবুতরের বিভিন্ন উপাদানে প্রয়োজনীয়তা ও সমাধান জেনে নিই।

অপুষ্টি ও বিপাকীয় রোগ সমূহঃ

১. ডিম দেবার ক্ষমতা হ্রাস।
২. দৈহিক বৃদ্ধি হ্রাস।
৩. পক্ষাঘাত,রক্ত শূন্যতা।
৪. ক্ষুদামন্দা।
৫. চর্ম রোগ।
৬. ডিমের খাসা পাতলা।
৭. ডিম আটকানো।
৮. দৃষ্টি শক্তি হ্রাস।
৯. উরবার ক্ষমতা হ্রাস। ইত্যাদি।
১০. জন্ম গত বিকলাঙ্গ।
১১. ডিমের মধ্যে  বাচ্চা মারা যাওয়া।
ইত্যাদি

প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়ঃ

ভিটামিন - এ এর অভাবঃ

রোগসমূহঃ
কবুতরের দেহে ক্ষতের সৃষ্টি  হয়, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায় এবং অক্ষিঝিল্লির প্রদাহ দেখা দেয় এছারাও ক্ষুধামন্দা, দৈহিক বৃদ্ধি হ্রাস ও পালকের গঠণ ব্যাহত হয়, উৎপাদ ও ডিম তা দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ

নিয়মিত ভিটামিন - এ, প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান অথবা ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাদ্য প্রদান করতে হবে।যেমনঃ- মটরশুঁটি, পুদিনাপাতার দ্রবন,দারুচিনি গুরা, বাদাম, ইত্যাদি।

ভিটামিন বি ১ এর অভাবঃ
রোগসমূহঃ
পা, ডানা ও ঘাড়ে পক্ষাঘাত হয়। ঘাড়ের পক্ষাঘাতের ফলে ঘাড় পেছন দিকে করে আকাশের দিকে মুখ করে থাকে, চলনে অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
ভিটামিন বি ১ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান অথবা চাউলের কুড়া, গমের গুঁড়া, শাক সবজি,টকদই, লেবু,অঙ্কুরিত সোলা,তিসি ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

ভিটামিন বি ২ এর অভাবঃ
রোগ সমূহঃ
বাচ্চার পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়। পরে নখ বা আঙ্গুল বাঁকা হয়ে যায়। বচ্চার দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
ভিটামিন বি ২ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল অতবা  সবুজ শাক সবজি, ছোলা, সজনেপাতা,মধু,মেথি, মটরশুটি ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

ভিটামিন বি ৬ এর অভাবঃ
রোগসমূহঃ
ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। ছানার বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। প্যারালাইসিস ও পেরোসিস হতে পারে।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
ভিটামিন বি ৬ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল অথবা মটরশুঁটি, হলুদ দ্রবন,মধু ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

ভিটামিন বি ১২ এর অভাবঃ
রোগসমূহঃ
বাচ্চার বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও রক্তশূন্যতা দেখা দেয় ডিমের উর্বরতা হ্রাস পায়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ

ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান। অথবা ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ খাদ্য যেমনঃ তিসি,অঙ্কুরিত সোলা,  ফিসমিল ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

ভিটামিন ডি এর  অভাবঃ
রোগসমূহঃ
অস্থি নরম ও বাঁকা হয়ে যায়, ডিম উৎপাদন ও তা দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস  পায়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ

ভিটামিন ডি ও মিনারেল প্রিমিক্স প্রদান করতে হবে অথবা  ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ কডলিভার অয়েল, ফিস মিল,পুদিনাপাতার দ্রবন, সজিনাপাতার দ্রবন, ইত্যাদি প্রদান করতে হবে।

ভিটামিন ই এর অভাবঃ
রোগসমূহঃ
পক্ষাঘাত।বুক ও পেটের নিচে তরল পদার্থ জমে, ইডিমা হয়। ডিমের উর্বরতা কমে যায়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
ভিটামিন ই প্রদান করতে হবে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার  যেমন শস্য দানা, গম, চাউলে কুড়া, শুটকি মাছ,লেবু,দারুচিনি খাওয়াতে হবে।


ভিটামিন কে এর অভাবঃ
রোগসমূহঃ
রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
ভিটামিন কে প্রিমিক্স ও মিনারেল প্রদান। ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাদ্য প্রদান যেমনঃ-সবুজ শাকসবজি।

ফলিক এসিড এর অভাবঃ
রোগ সমূহঃ
রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও পালক কম হয়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
ফলিক এসিড সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও সাথে ম্যানগানিজ প্রদান করতে হবে অথবা  ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাদ্য যেমনঃলেবু,মটরশুঁটি ইত্যাদি প্রদান করতে হবে।

ম্যানটোথেনিক এসিড এর অভাবঃ
রোগসমূহঃ
বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, চর্ম রোগ হয়, পা ও চোখের চারিপাশে নেক্রোসিস হয়। ডিমের উর্বরতা হ্রাস পায়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
ম্যানটোথেনিক এসিড সমৃদ্ধ ভিটামিন প্রদান অথবা ম্যানটোথেনিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ বাদাম, চাউলের কুড়া,  ইত্যাদি প্রদান করতে হবে।

বায়োটিন এর অভাবঃ
রোগসমূহঃ
ডিমের উর্বরতা হ্রাস ও চর্ম প্রদাহ দেখা দেয়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
বায়োটিন সমৃদ্ধ ভিটামিন ও খাদ্য প্রদান।


খনিজ পদার্থেঃ-সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়োডিন, ম্যানগানিজ, কপার এন্ড কোবাল্ট, আয়রন।

রোগসমূহঃ
হাড় গঠন ও বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ডিমের খোসা নরম হয়। রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। পেরোসিস ও প্যারালাইসিস হয়।

চিকিৎসা প্রতিকার ও প্রতিরোধঃ
কবুতরকে নিয়মিত ভিটামিন, খনিজ সমৃদ্ধ প্রিমিক্স ও খাদ্য প্রদান করতে হবে।

এমাইনোএসিড এর অভাবঃ

আমিষ বিভিন্ন প্রকার এমাইনো এসিড সরবরাহ করে যা দেহ গঠনের জন্য অত্যাবশ্যক। সুতরাং পাখিকে এমাইনো এসিড সমৃদ্ধ খাদ্য যেমনঃ-শুটকি মাছের গুড়া, সরিষা, তিল ও চীনাবাদাম সরবরাহ করতে হবে।

উপরোক্ত বিষয় গুলো ছারাউ কবুতরের রোগপ্রতিরোধে অনান্য  ভিটামিন ও মিনারেল  নিয়মিত প্রদান করা জরুরী।


প্রয়োজনীয় পোষ্ট পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকবেন এবং কোথাও ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ

স্ট্যাডি ও তথ্য সংগ্রহঃ বিভিন্ন রিসার্চ আর্টিকেল,পিজন রিলেটেড বই,ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা,বিভিন্ন খামারি ও ভেটেরিয়ানদের পরামর্শ।

তথ্য সংগ্রহে এবং লেখকঃ-
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD

   *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ