Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

সাল্মোনেল্লোসিস কি ও রোগ এর কারন,লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ।

 




আজকের আলোচনার বিষয়ঃ

                                                        সাল্মোনেল্লোসিস

আমরা ছোট বড় সকল কবুতর পালোক ভাই  এই বিষয় টা নিয়ে অনেক টাই ভীত। এমন কোন কবুতর পালক নেই যাকে কম বেশি  সাল্মোনেল্লোসিস এর মোকাবেলা করতে হয় নি।আজ আপনাদের সম্মুখে এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে চেষ্টা করবো,কোথাও কোন ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো। আজকের আলোচনাকে আমি তিনটি প্রশ্নে ভাগ করেছি।আসা করি এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর পেলে সমস্ত কবুতর পালোক ভাইদের অনেক উপকারে আসবে।
চলুন তাহলে আলোচনায় যাওয়া যাক।

প্রশ্ন গুলে হলোঃ
১. সাল্মোনেল্লোসিস কি?
২. সাল্মোনেল্লোসিস এর লক্ষন গুলো কি কি?
৩. সাল্মোনেল্লোসিস এর প্রতিরোধে কি কি ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে?

***১. সাল্মোনেল্লোসিস কি?
 Ans: সাল্মোনেল্লোসিস হলো ইনফেকশাস ব্যাক্টেরিয়া টাইপের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি লক্ষণীয় সংক্রমণ। সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ ডায়রিয়া, জ্বর, এবং বমি। কবুতরের সবথেকে মারাত্মক রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান রোগ হচ্ছে এই  সাল্মোনেলাসিস। ইনফেকশাস ব্যাক্টেরিয়াল রোগগুলোর মধ্যে এ রোগে মৃত্যুর হার সব থেকে বেশী। দ্রুত এর চিকিৎসা না করালে ৪/৫ দিনের মধ্যে কবুতর মারা যেতে পারে।

যে সকল মাধ্যমে সাল্মোনেলা ছড়াতে পারে:
১. জীবানু সম্বলিত ধুলিকনা মিশ্রিত শ্বাস গ্রহন এর দ্বারা।
২. পোকামাকড়, মাছি, ইদুর ইত্যাদি দ্বারা দুষিত খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে।
৩.  অপরিষ্কার খাবার পাত্র এবং পানির পাত্র থেকে।
৪. মেটিং বা রতীক্রিয়া থেকে।
৫. আক্রান্ত  পিতা মাতা থেকে ডিমে সংক্রমন এর মাধ্যমে।
৬. ছোট বেবীকে ক্রপ মিল্ক খাওয়ানোর মাধ্যমে এবং বিলিং এর মাধ্যমে।
৭. বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে বাবা-মা দুজনে অথবা কোন একজন "ক্যারিয়ার" বা জীবানূর "বাহক" হিসেবে কাজ করে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ইকোলাই, সাল্মোনেলাসিস কিংবা মাইকোপ্লাজমোসিস রোগের জীবানূ বহনকরী বাবা-মা থেকে ডিম এবং ভ্রুন আক্রান্ত হয়। সাল্মোনেলাসিস বাহক প্যারেন্টস এর বেবী অল্প বয়সেও মারা যেতে পারে।
৮. সাল্মোনেল্লা আক্রান্ত কবুতর এর বিষ্টা বা নিশ্বাস এর মাধ্যমে।

****২. সাল্মোনেল্লোসিস এর লক্ষন গুলো কি কি?

Ans:

১.আন্ত্রিক প্রদাহের সাথে নরম, মিউকাস (আমাশয়) সমৃদ্ধ সবুজ ড্রপিংস।
২.লিভার, কিডনী আক্রান্ত হবার পর স্বাভাবিক দৈহিক বৃদ্ধিহীনতা, দুর্বিলতা/ক্লান্তি।
৩.সাল্মোনেলা আক্রান্ত ভ্রুন সাধারনত ডিমের খোশার ভেতরেই মৃত্যু বরন করে কিংবা বেবী জন্ম নেবার প্রথম কয়েকদিনের ভেতরে মারা যায়।
৪.ইনফ্লামেশনের কারনে হাড়ের জয়েন্ট ফূলে ওঠে বিশেষকরে ডানা বা পা এর প্যারালাইসস ও ভারসাম্যহীনতা এবং গলা বাকানো(টাল)।
৫. তীব্র দুর্গন্ধময় আমাশয় যুক্ত ড্রপিংস।
৬. ডাইরিয়া দেখা দেয় এবং মলদ্বারের আশে পাশের পালকে বিষ্টা লেগে থাকে।
৭. কবুতর ঝীমায়।
৮. স্বাস কষ্ট হয়।
৯.  গারো সবুজ পায়খানা করে ।
১০. বমি করে।
১১.  খাবার কম খায় , পানি বেশী খায়।
১২.অনেক সময় এক চোখ গাড় হলুদ বরন হয়ে অন্ধ হয়ে যায়।

***৩. সাল্মোনেল্লোসিস এর প্রতিরোধে কি কি ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে?

Ans:

প্রতিরোধঃ
সাল্মোনেল্লোসিস প্রতিরোধ ও প্রতিকারক হিসাবে লেবু,চিনি ও লবনের মিশ্রণ। এটাই সর্বত্তম ব্যবহার।

ক. পানিঃ ১ লিটার।
খ.লেবুর রস, মাঝারি সাইজ এর অর্ধেক।
গ. চিনি: ৫ চা চামচ।
ঘ. লবন: ৫ চিমটি।

#লেবু,#চিনি,#লবন এর ব্যবহার- 

ভালোভাবে মিক্স করে কবুতরকে প্রতি সপ্তাহে ১ দিন করে খাওয়ান।

পাশাপাশি ১ চামচ রসুনের রস ১লিটার পানির সাথে মিশিয়ে কবুতরকে খেতে দিবেন
সপ্তাহে এক দিন।

দারুচিনি গুড়া করে ১টেবিল চামচ সাথে ( ছোট ১টা লেবুর হাফ করে অথবা ১ চামচ অ্যাপলসিডার ভিনেগার)  ১ কেজি কবুতরের খাবারের সাথে মিক্স করে দিবেন সপ্তাহে ১\২ দিন ।
বিস্তারিত #দারুচিনি -

অথবাঃ
২ টেবিল চামচ শাফি + ২ টেবিল চামচ ফেবনিল + ১ টেবিল চামচ মারবেলাস ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ৪-৫ দিন সাধারণ খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করতে হবে।

অথবাঃ
হেমিকো পিএইচ ২ মিলি ১ লিটার পানিতে মাসে  ৪/৫ দিন।
আক্রান্ত হলে ২.৫ মিলি ১ লিটার পানিতে।

অথবাঃ
হোমিও ব্যাপ্তেসিয়া ৩০, ১ সিসি =১ লিটার পানিতে মিক্স করেও ৫ দিন।

অথবাঃ
অপরিশোধিত  অ্যাপল সিডার ভিনেগার(ACV) ৫ মিলি এক লিটার পানিতে সপ্তাহে ১ দিন।

(বিঃদ্রঃ এই কোর্স চলাকালীন কবুতর সবুজ পায়খানা করতে পারে, এতে ভয়পাবার কিছু নেই।  দীর্ঘ মেয়াদে কবুতরকে সাল্মোনেল্লা মুক্ত রাখতে ভেক্সিন এর কোনো বিকল্প নেই।

সাল্মোনেল্লা এর চিকিৎসাঃ

১.অসুস্থ কবুতর কে দ্রুত সুস্থ কবুতর থেকে আলাদা করুন।
২.অসুস্থ কবুতরের বিষ্টা,পানির পাত্র জীবাণুমুক্ত করুন।
৩.রাইচস্যালাইন খাওয়ান।

সর্বপরি সঠিক চিকিৎসার জন্য অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি ডাক্তার এর পরামর্শ নিন।



প্রয়োজনীয় পোষ্ট পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকবেন এবং কোথাও ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ

স্ট্যাডি ও তথ্য সংগ্রহঃ বিভিন্ন রিসার্চ আর্টিকেল,পিজন রিলেটেড বই,ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা,বিভিন্ন খামারি ও ভেটেরিয়ানদের পরামর্শ।

তথ্য সংগ্রহে এবং লেখকঃ-
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD

   *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

  1. গ্রামে কবুতর ছেড়ে দিয়ে পালন করলে নিজেই পুকুর ইত্যাদি থেকে পানি খায়। সেজন্য পানির সাথে ঔষধ মিশিয়ে দিয়ে খাওয়ানো যাবে না। কবুতরকে সিরিঞ্জ দিয়ে খাওয়াতে হলে প্রয়োগ মাত্রা কী রকম হবে?

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. আপনার প্রশ্নের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন অবস্থায় আপনি বাচ্চা কবুতরকে ৫সিসি /এমএল এবং এ্যাডাল্ট কবুতর কে ১০ সিসি/এমএল করে সিরিঞ্জ দিয়ে দিনে একবার খাইয়ে দিতে পারেন - ধন্যবাদ

      মুছুন

Thanks for Commenting! please follow our blog and see update continue