![]() |
সুষম খাবারেরতালিকা |
সুষম খাবারেরতালিকা: কবুতরের খাবার ও পানি তার স্বাস্থ্যগত ব্যাপারে বিরাট ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে ব্রিডিং কবুতরের জন্য সুষম খাদ্য এর তুলনা নাই। কবুতরের খাদ্যে শ্বেতসার, চর্বি, আমিষ, খনিজ ও ভিটামিন প্রভৃতি থাকা প্রয়োজন। কবুতর তার দেহের প্রয়োজন এবং আকার অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। প্রতিটি কবুতর দৈনিক প্রায় ৩০-৫০ গ্রাম পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করে থাকে। কবুতর প্রধানত গম, মটর, খেশারী, ভুট্টা, সরিষা, যব, চাল, ধান, কলাই ইত্যাদি শস্যদানা খেয়ে থাকে। এ ছারাও কবুতর কে নিয়মিত গ্রিড এর পাশাপাশি পরিস্কার পানি সরবরাহ করতে হবে। সুষম খাদ্য ও পরিস্কার পানি আপনার খামারের ৯০% রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে। আপনি যদি আপনার কবুতর কে সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে বার্থ হন তাহলে আপনি যতোই ভিটামিন বা অন্য কোণ খাদ্য সহায়ক দেন না কেন কোণ কাজে আসবে ।তাই নিয়মিত সুষম খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে যেকোনো সফল খামারিকেই ।
কবুতরের যতো রোগ হয় তার অধিকাংশই সূত্রপাত হয় খাবার ও পানির মাধ্যমে, তাই খাবার দিবার আগে সেগুলো যতদূর সম্ভব পরিষ্কার করে নিতে হবে, যেমন পানিতে ধুয়ে রোদে শুকীয়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে যে সব খাবার আবাড় ধুয়া সম্ভব না, যেমনঃ তিসি, চীণা,কাওণ, সবুজ মটর ইত্যাদি, তবে কিছু ধুয়াটা খুবই জরুরী, যেমন কালী মটর, লাল বাজরা, সাদা দেশী মটর, লাল মটর, মূঘ ডাল,সরিষা ইত্যাদি । অনেকে কবুতর কে ধান দিতে দেখা যাই, ধান বাচ্চা কবুতরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে, কারন ধানের ধারালো কোণা থেকে তা থেকে পাকস্থলী ও গলাতে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে ।অপর দিকে ধান কবুতর এর ডিমের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।তবে রেসিং বা হাই ফ্লায়িং কবুতর এক খাদ্য তালিকায় ধান থাকা জরুরী। অনেকে বলেন সারা বছর কবুতর কে সরিসা খাওয়ানো ঠিক না আমি বলবো আপনার কবুতর এর খাবারের তালিকায় সরিসা রাখুন, আপনি নিজেই এর ফলাফল উপলব্ধি করতে পারবেন তবে গরমের দিনে পরিমাপে কম দিবেন এবং শীতে পরিমাপটা একটু বাড়িয়ে দিবেন।
কিছু খাবার আছে যেগুলো দিলে সবুজ পায়খানা হতে পারে, তার মানে এই না যে কবুতরটি সাল্মনিলা আক্রান্ত হয়েছে, আনুরুপ ভাবে কিছু খাবার আছে যেটা আকেবারেই না খাওয়ানো ভাল যেমন রেজা। নতুন রেজা সাল্মনিলা সহ অন্য অনেক রোগের কারন হতে পারে।
কবুতরের খাবার উপাদানগুলোকে আমরা মুলত প্রধান তিন ভাগে ভাগ করতে পারি।
(১) কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার: ধান, চাল, গম, ভুট্টা, বাজরা, চিনা, মিলেট, জব, বাকহুইট ইত্যাদি।
(২) প্রোটিন জাতীয় খাবার: ডাবলি, ছোলা, মুশুরি, মুগ, রেজা, খেশারি, সয়াবিন, ফেলন, মটর, কালী, এংকর, হেম্প সীড ইত্যাদি। ব্রীডিং এর কবুতরের জন্য মোট খাবারের অন্তত ৫% সয়াবীন দিলে খুব ভালো হবে, এতে প্রোটিনের ব্যালান্স তৈরী হবে।
(৩) ফ্যাট/তেল জাতীয় খাবার: সরিষা, কুসুম ফুলের বীজ, তীসি, সূর্যমুখীর বীজ, তিল, কালিজিরা, বাদাম ইত্যাদি।
এবার আসি কোন উপাদানের কি রয়েছেঃ
#কার্বোহাইড্রেট হচ্ছে কবুতরের আসল চালিকা শক্তি বা পেট্রোল। দেহের বিভিন্ন প্রয়োজন মেটানোর পাশা পাশি এটা দ্রুত ব্লাড সুগার সরবরাহ করে কবুতরকে উড়তে সাহায্য করে।
#প্রোটিন দেহ গঠনের মুল উপাদান। শক্তিশালী দেহ এবং ডানা গঠনে এর কোন বিকল্প নেই।
#ফ্যাট ঠান্ডার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কঅঅবুতরের মূল হাতিয়ার আর লম্বা সময় ওড়ার জন্য ২য় পর্যায়ের জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নিজস্ব মিক্স বানাতে চাইলে খাবারে যে সকল উপাদান এর উপস্থিত রাখা থাকা প্রয়োজন।
(১) গ্রীষ্মকালীন
৫৫ - ৬০ % কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার
৪০ - ৩৫% প্রোটিন জাতীয় খাবার
৫% ফ্যাট জাতীয় খাবার বাঞ্ছনী।
(২) শীতকালীন:
৫০- ৬০% কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার
৪০ - ৩০% প্রোটিন জাতীয় খাবার
১০% ফ্যাট জাতীয় খাবার বাঞ্ছনীয়।
কবুতর এর জন্য খাবারের তালিকাঃ(সাধারন)
পরিমাপ ৪০ কেজি
***শীতকালীন খাবার তালিকা।
গম..............................১৫ কেজি
ধান(ছোট) ........................৩কেজি
ছোট ভুট্টো.....................৩কেজি
বাজরা(লালঃ সাদা)..........২ কেজি
চিনা..............................১কেজি
ডাবলি(ছোট).................... ২ কেজি
ছোলা দেশি.....................২ কেজি
মশুরি.............................২কেজি
খেসারী...........................১কেজি
মাশকলাই........................১ কেজি
সয়াবিন...........................২ কেজি
মটরকলাই(কালোঃ সাদা)....২ কেজি
সরিশা.............................১ কেজি
কুসুমফুল.........................১ কেজি
তিসি...............................১ কেজি
সূর্য মুখি বীজ................... ১ কেজি
***গ্রীষ্মকালীন খাবার তালিকাঃ
গম..................................১৮কেজি
ধান(ছোট) ............................৪কেজি
ছোট ভুট্টো.........................৩কেজি
বাজরা(লালঃসাদা)................২কেজি
চিনা..................................১কেজি
ডাবলি(ছোট)......................... ২ কেজি
ছোলা দেশি........................১কেজি
মশুরি................................২কেজি
খেসারী..............................১কেজি
মাশকলাই..........................১ কেজি
সয়াবিন.............................২কেজি
মটর ( কালোঃ সাদা)..............২ কেজি
সরিশা...............................২৫০গ্রাম
কুসুমফুল...........................২৫০গ্রাম
তিসি.................................২৫০ গ্রাম
সূর্য মুখি.............................২৫০ গ্রাম
সর্বমোট = ৪০ কেজি।
বিঃদ্রঃ রেসার বা হাইফ্লায়ার কবুতর এর খাবারে গমের পরিমান টা একটু কমিয়ে ধান এর পরিমান বাড়িয়ে দিবেন ৫/২অনুপাতে দিতে পারেন ।
=> ধান কবুতর এর ডিম উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।অনান্য কারনে যদি ধান না দিতে চান তবে ধান এর স্থানে গম দিবেন।
উল্লেখিত উপকরন দিয়েই যে খাবার মিক্সড করতে হবে এমনটা নায়। আপনি আপনার কবুতর এর পছন্দ অনুযায়ী খাবার ও পরিমাপ করে নিতে পারেন। তবে আবশ্যিক বিষয় হলো খাবার টা যেন কবুতর এর জন্য সুষম খাদ্য হয়। এবং প্রয়োজনীয় উপাদান যাতে সঠিক অনুপাতে থাকে।
এছারাউ মাঝে মাঝে, কালোজিরা,জাউন,মেথি,বাদাম সপ্তাহে কমপক্ষে ১ দিন খাবারের এর পাশাপাশি এবং
#রসুন,#আদা,#তুলসিপাতা,#অ্যালভেরা,#থানকুনিমপাতা,#দারুচিনি_গুরা,#নিমপাতা,#সজিনাপাতা,#এ্যাপেল_সিডার, এসব উপাদান কবুতর কে মাঝে মাঝে খেতে দিন এতে একদিকে যেমন ভিটামিন,মিনারেল,ক্যালসিয়াম সহ অনান্য প্রোয়জনীয় উপাদান এর অভাব পুরন করে কবুতরকে সুস্থ রাখবে অপর দিকে ঔষুধ এর উপর নির্ভরতা কমিয়ে দিয়ে আপনার খামারের অনাকাঙ্ক্ষিত রোগবালাই হতে রক্ষা করবে।
মানসম্মত কবুতরের খাবার ও গ্রীডের জন্য এখনি যোগাযোগ করুন।
**** পায়রা পুষ্টি মিক্স***
Call:- 01682476904
আপনি আরও পড়তে পারেন:
কবুতরের ঠান্ডা জনিত সমস্যা চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার।
অসুস্থ কবুতরের চিকিৎসায় প্রতিকারের পাশাপাশি প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব এবং পরবর্তী পদক্ষেপ।
প্রয়োজনীয় পোষ্ট পেতে আমাদের ব্লগটি Follow করুন এবং আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকবেন এবং কোথাও ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।
আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ
স্ট্যাডি ও তথ্য সংগ্রহঃ বিভিন্ন রিসার্চ আর্টিকেল,পিজন রিলেটেড বই,ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা,বিভিন্ন খামারি ও ভেটেরিয়ানদের পরামর্শ।
তথ্য সংগ্রহে এবং লেখকঃ-
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD
*******Thank You *******
4 মন্তব্যসমূহ
অনেক উপকারী তথ্য সমৃদ্ধ একটি সাইট উপহার দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ,আসাকরি সাইটি থেকে নতুন এবং পুরাতন কবুতর পালকগন অনেক উপকৃত হবে - ধন্যবাদ আপনাকে
উত্তরমুছুনআপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাইটি ভিজিট করার জন্য। আসা করি আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে পাশে থাকবেন। -ধন্যবাদ
মুছুনকবুতর এর খাবার সংক্রান্ত অনেক কিছু জানলাম। কবুতরের অসুখ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
উত্তরমুছুনঅসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের ব্লগ টি ভিজিট করার জন্য, আপনি জানতে চেয়েছেন কবুতরের রোগবালাই সম্পর্কে, অনুগ্রহ করে মেইন মেনু থেকে "কবুতরের রোগ ও চিকিৎসা" অধ্যায়টি নির্বাচন করুন, এখানে কবুতরের সমস্ত রোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে । ধন্যবাদ
মুছুনThanks for Commenting! please follow our blog and see update continue